
প্রিন্ট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৪ এএম
অদিতাকে হত্যার বর্ণনায় যা বলল রনি

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩৪ পিএম

আরও পড়ুন
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে প্রধান আসামি সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি (২০)।
শনিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদের আদালতে আসামি রনির ১৬৪ ধারা জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
রনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে- সে বারবার চেষ্টা করেও অদিতাকে চুমো খেতে না পেরে তার ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে তাকে বিবস্ত্র করে। তারপরও তার প্রতিরোধে তাকে ধর্ষণ করতে পারেনি। তখন এ ঘটনা সবাইকে জানিয়ে দেবে- এই ভয়ে অদিতাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে রনি। তারপর অদিতার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পাকঘর থেকে ছুরি এনে তার গলা কেটে ও হাতের রগ কাটে। পরে বাহির থেকে ঘরে তালা মেরে চলে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে রনি আরও জানায়, সে ক্রাইম পেট্রোল দেখে হত্যাকাণ্ডের কৌশল অবগত করেছে। সেভাবেই অদিতাকে সে হত্যা করে।
এ খবর নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম আবেগাপ্লুত হয়ে জানান, আমার মেয়েও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। অথচ আমরা এ সমাজের হয়ে অদিতাকে বাঁচাতে পারলাম না।
এদিকে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে রোববারও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তার সহপাঠী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ২ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে নোয়াখালী শহর অচল করে দেন।
রোববার দুপুরে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ২ ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করেন। এতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি ছাড়াও গোটা শহর অচল হয়ে পড়ে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে খুনি ও ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, আমার বোন কবরে? খুনি কেন বাহিরে। ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সঙ্গে রোববার অভিভাবক, শিক্ষকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের মিছিলের সময় রাস্তার দুপাশে অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার জেলা শহর মাইজদীতে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশের একাধিক দল পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি (২০), ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদকে (২০) গ্রেফতার করে। শুক্রবার আদালত রনির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রনি হত্যার কথা স্বীকার করে।