Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঝড়ের কবলে পড়ে ভোলার ১১৮ জেলে নিখোঁজ 

Icon

লালমোহন ও চরফ্যাশন দক্ষিণ (ভোলা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২২, ১০:৪৩ এএম

ঝড়ের কবলে পড়ে ভোলার ১১৮ জেলে নিখোঁজ 

লালমোহনে ঘাটে ফিরেছে একটি মাছ ধরার ট্রলার। ছবি-যুগান্তর

বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ভোলার দুই উপজেলার আটটি ট্রলারসহ ১১৮ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে লালমোহনের চার ট্রলারসহ ৪৭ জেলে ও চরফ্যাশনের ৪ ট্রলারসহ ৭১ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। 

প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ-

গভীর সমুদ্রে গিয়ে ভোলার লালমোহনের চারটি মাছধরা ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে গেছে। এ সময় ট্রলারে থাকা ৬০ জন মাঝি-মাল্লা সমুদ্রে ডুবে যায়। এদের মধ্যে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। 

শুক্রবার গভীর রাতে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার ফিশিং গ্রাউন্ড এলাকায় ট্রলারগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে। 

উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা তানভির আহমেদ জানান, লালমোহন বাতিরখাল এলাকার হারুন অর রশিদ ফারুকের এফভি লামিয়া, লর্ডহার্ডিঞ্জ বুড়িরধোন এলাকার নূরুউদ্দিন মাঝির ট্রলার ও গাইট্টা এলাকার নাজিম উদ্দিন মাঝির ট্রলারসহ কয়েকটি ট্রলার ডুবে গেছে। 

তিনি বলেন, শনিবার সকালে এসব ট্রলারডুবির খবর জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উদ্ধার হওয়া জেলেদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান চলছে।

এফভি লামিয়া ট্রলারের মালিক হারুন অর রশিদ ফারুক জানান, ১৭ আগস্ট দুপুরে বাতিরখাল ঘাট থেকে ১৩ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে গভীর সমুদ্রে যায় তার ট্রলার। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বোটটি হঠাৎ গভীর সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। জেলেদের সন্ধান না পেলেও শনিবার সকালে সুন্দরবন এলাকা থেকে ফোনে জানতে পারেন, অন্য দুটি বোটে আটজন জেলে উদ্ধার হয়েছে। তারা সুন্দরবন এলাকায় আছেন। বাকি পাঁচজনের এখনো কোনো সন্ধান পাননি। তার ট্রলারের নিখোঁজ জেলেরা হলেন- আব্দুল মোতালেব, আবুল কালাম, আরিফ, নিরব ও মাকসুদ। 

লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকায় ডুবে যাওয়া তিনটি ট্রলারের পাঁচজনকে উদ্ধার করে নোয়াখালীর হাতিয়ায় রাখা হয়েছে। বাকি ৪২ জেলের এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া।

অপরদিকে চরফ্যাশন উপজেলার তিন ইউনিয়নের চারটি মাছ ধরার ট্রলারের ৭১ জেলে নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। এখনো তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর থেকে আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মো. রাসেল মাঝি, ৭নং ওয়ার্ডের রিপন মাঝির মাছ ধরার ট্রলারের মোট ২৯ জন নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শফিউল্লাহ মাঝির ১৪ জন, ৯নং ওয়ার্ডের খোকন মাঝির ১৬ জন জেলের হদিস পাওয়া যায়নি। 

চর কুকরিমুকরি ইউনিয়নের নাছির মোল্লা মাঝি ১২ জেলে নিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন বলে ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন জানিয়েছেন।  
 
আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়ানুর বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে রুবেল (২৫) ও জুবেল (২০) শুক্রবার দুপুর থেকে খোঁজ পাওয়া যায়নি। তারা রিপন মাঝির ট্রলারে ছিল। 

আহম্মদপুর গ্রামের বাচ্চু পলোয়ান বলন, মেঘভাষান ও হাজির হাটের রাস্তার মাথা থেকে প্রায় ৩০টি মাছ ধরার ট্রলার সমুদ্রে যায়। সব ট্রলার ঘাটে আসলেও দুটি আসেনি। এ দুটি ট্রলারের জেলেদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে তাদের ট্রলার ডুবে গেছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। 

জাহানপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপির চেয়ারম্যান আলী আকবর ফরাজী বলেন, আমাদের এলাকার শফিউল্যাহ মাঝি ও খোকন মাঝির মাছ ধরার ট্রলারটি দুটি নিখোঁজ রয়েছে। তাদের ট্রলারে ৩০ জেলে ছিলেন।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, চর কুকরিমুকরির একটি ও হাজারীগঞ্জের দুটি ট্রলার পাওয়া যায়নি- এমন তথ্য আমার কাছে রয়েছে। 

শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল মতিন খান বলেন, মোট ১৩টি ট্রলারের মধ্যে ১০টির সন্ধান পাওয়া গেছে। বাকি তিনটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্ধারের জন্য উপজেলার প্রশাসন, চর মানিকার কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম