Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘বাবা এরা আমাকে মেরে ফেলবে, আমাকে বাঁচাও’

Icon

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৭:১৩ পিএম

‘বাবা এরা আমাকে মেরে ফেলবে, আমাকে বাঁচাও’

‘বাবা এরা আমাকে মেরে ফেলবে, তাড়াতাড়ি আসো, আমাকে বাঁচাও’- শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন করে বাবার কাছে এভাবেই বাঁচার আকুতি জানান মেয়ে।পরদিন সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যান বাবা, কিন্তু পেলেন মেয়ের লাশ।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাতলামারী এলাকার দিনমজুর মনিরুল ইসলাম একথা জানান।মনিরার স্বামী একই ইউনিয়নের নওদা আজমপুর এলাকার সজিব মোল্লা অনিক (২৮)।

রোববার সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের নওদাআজমপুর গেলে মেয়ে মনিরা খাতুন মিমের লাশ পান মনিরুল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, যৌতুকের টাকার জন্য কিছুদিন পর পরই মিমকে মারধর করতেন তার স্বামী সজিব। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। গত ২ দিন ধরে মিমকে খেতে পর্যন্ত দেননি অনিকের মা রাজেনা খাতুন (৪০)। শনিবার বিকালে মিমকে মারধর করেন তারা।ওই সময় স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। পরে রাতে আবার চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পায় প্রতিবেশীরা।সকালে সবাই জানতে পারে রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন মিম।

মিমের বাবা মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ফোন করে মিম। বলে ‘বাবা এরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে এসে নিয়ে যাও, আমাকে বাঁচাও। তাৎক্ষণিক জামাই অনিক ফোন নিয়ে বলে, আমার ২০ হাজার টাকা দরকার। কোথায় পাবেন তা জানি না। আমাকে টাকা দেন, না হলে আপনার মেয়েকে মারতে মারতে মেরে ফেলব।’ তখন আমি তাকে বলি, আমি গরিব মানুষ টাকা কোথায় পাব।মেয়েকে মেরে ফেললেও এখন টাকা দিতে পারব না।

তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের অমতে ৫ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করে মিম ও অনিক। পরে জামাইয়ের জন্য ১ লাখ টাকা নগদ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর টাকা চাইলে আরও ৮০ হাজার টাকার মতো দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়ের সুখ আসে না। এর আগেও টাকার জন্য মারধর করে অনিক। মাঝে মাঝে এমন মারধর করলে আমি এসে মেয়েকে একাধিকবার আমার বাড়িতে নিয়েও গেছি।’

‘গতকাল এসে যদি মেয়েকে নিয়ে যেতাম তাহলে আজ হয়তো তার লাশ দেখতে হতো না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো বাবার বুক এভাবে খালি না হয়।

মিম ও অনিকের সংসারে তিন বছরের একটি মেয়ে এবং আট মাসের আরেকটি মেয়ে রয়েছে।এ ঘটনার পর থেকে অনিক, তার বাবা শরিফ মোল্লা (৪৭) ও মা রাজেনা খাতুন (৪২) পলাতক রয়েছেন।

আমলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জন্য এ ঘটনা ঘটতে পারে।এ ঘটনার পর থেকে মিমের স্বামী-শ্বশুর ও শাশুড়ি পলাতক রয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম