নবীগঞ্জে বন্যায় হুমকির মুখে বিবিয়ানা গ্যাস-বিদ্যুৎ কেন্দ্র
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২২, ১১:৩৭ এএম
বন্যার পানি থেকে সুরক্ষায় নিজেই বাঁধ দিচ্ছেন বৃদ্ধা। ছবি: যুগান্তর
সিলেট ও সুনামগঞ্জের পর এবার বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে কুশিয়ারা-খোয়াই-কালনীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছুস্থানে বিদ্যুৎ ও রাস্তা যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েকদিনের টানা উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলায় বড় ভাকৈর (পশ্চিম), বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়ন, করগাঁও ইউনিয়ন, দীঘলবাক, ইনাতগঞ্জ, আউশকান্দি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করছে।
উপজেলার দীঘলবাকের মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর ও গালিমপুর, রাধাপুর গ্রাম পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের কসবা-বান্দেরবাজার সড়ক ডুবে দ্রুতগতিতে পানি প্রবেশ করছে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে।
ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ইনাতগঞ্জ অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের অন্যতম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা ও পারকুলে অবস্থিত কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র হতে ৪-৫ ফুট নিচে বর্তমান পানি রয়েছে।
তবে পানি বৃদ্ধি পেলে গ্যাসক্ষেত্রে পানি প্রবেশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পানি দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাধারণ মানুষ। দিশেহারা অসহায় মানুষজন ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়স্থলে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৫ শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেয়া হলেও তা অপ্রতুল বলছেন স্থানীয়রা। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেন বলেন- বন্যার পানি ইনাতগঞ্জের প্রতিটি গ্রামে প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি বলেন, যে হারে পানি প্রবেশ করছে এবং পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে পানি প্রবেশের সম্ভবনা রয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন জানান, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে প্রায় ১৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে কয়েক শতাধিক পরিবার অবস্থান নিয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা, কালনী, খোয়াই ও বিবিয়ানা নদীর পানি ভোর পর্যন্ত বাড়ছিল। তবে সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি বাড়েনি।