সৈয়দপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২২, ০৪:০৯ এএম
নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনে এবং সেই সঙ্গে দ্বিগুণ দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ ও পরামর্শ পেয়ে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। বিঘায় ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৩৫ মণ। গত বছর প্রতি মণ ভুট্টার দাম যেখানে ছিল ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে চলতি বছর তা হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা এই দামে মাঠ থেকেই কাঁচা ভুট্টা কিনছেন। এতে করে কৃষকরা প্রতি বিঘায় খরচ বাদে আয় করছেন ২২ থেকে ২৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাড়াই যন্ত্রের মালিকরা ভুট্টা মাড়াই করে দিতে বিঘাপ্রতি নিচ্ছেন ৬০০ টাকা। তারা একদিনে ১৫ থেকে ১৮ বিঘার ফসল মাড়াই করে ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা আয় করছেন।
কৃষি অফিস জানায়, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু পালন বেড়েছে। এতে খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই শস্যটির চাহিদাও থাকছে বছরজুড়ে। যার কারণে ভালো দাম পাওয়ায় প্রতি বছর কৃষকরা ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষে। শস্যটি বিক্রি করে শুধু নগদ অর্থ প্রাপ্তি নয়, সেই সঙ্গে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে কচিপাতা এবং জ্বালানি হিসেবে শুকনো কাণ্ড, খোসা ব্যবহার করা যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ভুট্টা তোলামাত্রই কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাড়িতে নগদমূল্যে বিক্রি করছেন।
উপজেলার বাঙালিপুরের ভুট্টাচাষি সরাফত হোসেন জানান, গত বছর যে ভুট্টা মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, এ বছর বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে তার খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছেন ১৩৫ মণ। যাতে খরচ বাদে লাখ টাকার অধিক আয় করেছেন, যা অন্য ফসলের চেয়ে তিনগুণ বেশি।
উপজেলার কামারপুকুরের কৃষক আহসানুল হক বলেন, যৎসামান্য খরচে উৎপাদিত ভুট্টা কৃষক, ব্যবসায়ী, বর্গাচাষি পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থা পাল্টে দিয়েছে। একসময় যে জমিগুলো অনাবাদি পড়ে থাকত, এখন সেই জমিতে ভুট্টার পর আউশ, আমন চাষ চলছে। এর পর আগাম আলু চাষ করা যাবে যথাসময়ে।
উপজেলার বোতলাগাড়ির কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার খরচ তুলনামূলকভাবে কম। এবছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি ২ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন আগামীতে জমির পরিমাণ বাড়াবেন।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম বলেন, কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে কৃষকেরা যথাসময়ে কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ পেয়ে ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন। তারা ভালো ফলন ও দ্বিগুণ দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।