Logo
Logo
×

সারাদেশ

মনে হয় ‘ঈদের' মতো আনন্দ

Icon

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:৪৪ পিএম

মনে হয় ‘ঈদের' মতো আনন্দ

দীর্ঘ ৫৪৩ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এ সময় শিক্ষকদের আনন্দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে দেখা গেছে।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে গোলকপুর প্রাথমিক ও এলএম পাইলট মডেলসহ কয়েকটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

রোববার সকালে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এলএম পাইলট মডেল, সরকারি মার্চেন্টস একাডেমি ও গোলকপুর সরকারি প্রাথমিকসহ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ বিরতির পর স্কুলে আসতে পেরে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করে। অনেকে জানান, ‘ঈদের' মতো আনন্দ হচ্ছে।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসার পর তাদের মনে হয়েছে প্রথম স্কুলে আসার দিন যে রকম অনুভূতি হয়েছিল, আজ তাদের সেরকম অনুভূতি হচ্ছে। অনেক দিন পর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় যেন ঈদের মতোই আনন্দ লাগছে।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চরপাতার গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেরিন সুলতানাকে নিয়ে আসেন তার মা পারভিন।

পারভিন আক্তার যুগান্তরকে বলেন, অনেক দিন পর মেয়েকে স্কুলে নিয়ে আসতে পারায় খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন বাড়িতে থেকে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। আগে স্কুলে যখন মেয়েকে নিয়ে আসতাম, আর আজকে যে নিয়ে আসলাম এর মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেয়েকে স্কুলে আনতে হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের স্কুলের ভেতরে নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গাইডলাইন দিচ্ছেন, যোগ করেন তিনি।

এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সোহাগি আক্তার যুগান্তরকে বলে, অনেক দিন পর স্কুলে আসায় বেশ আনন্দ হচ্ছে। স্কুলে প্রথম ঈদের মতোই আনন্দ পাচ্ছি।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলে, নবম শ্রেণিতে ওঠার পর আজকেই প্রথম ক্লাসে আসলাম। অনেক দিন পর শিক্ষক-সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হলো। আমি খুবই আনন্দিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকরা আমাদের বরণ করে নিয়েছেন।

রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান লিটন বলেন, শিক্ষার্থীদের বরণ করতে ক্লাসরুমগুলো সাজানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মনে যেন করোনার ভয় না থাকে, এতে শিক্ষকরা আজকে অনুপ্রেরণামূলক ক্লাস নেবেন। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সঙ্গেও বৈঠক করেছি। আজকে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসেছে। সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মানেন, তা নিশ্চিত করতে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।

আজকে শুধু সিলেবাস পরিচিতি ক্লাস নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রায়পুরের গোলকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাথী রানী সাহাসহ সালেহা মুক্তাসহ সহকারী শিক্ষিকারা সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করান। স্কুল কর্তৃপক্ষকে স্কুলের প্রবেশ পথে শিক্ষার্থীদের হাত পরিষ্কার করার পর তাদের চকলেট, গোলাপ ও বেলুন দিয়ে বরণ করে নিতে দেখা গেছে।

রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে স্বল্পপরিসরে অ্যাসেম্বলির আয়োজন করা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শপথবাক্য পাঠ ও জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করান।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারি ঘোষণার পর থেকে উপজেলার ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২১টি মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ৮টি কলেজ (উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত) ও ৭৫টি কেজি স্কুল রোববার খোলা শুরু হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম