টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পেল নেত্রকোনার ২১ কিশোর

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২১, ১২:২১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় টানা ৪০ দিন মসজিদে ‘তাকবির উলা’র সঙ্গে জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী ২১ শিশু-কিশোরকে বাইসাইকেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকালে উপজেলার গ্রিদান টেংগা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিজয়ী শিশুদের প্রত্যেককে একটি করে বাইসাইকেল তুলে দেন মসজিদ কমিটির সদস্যরা।
গ্রামের শিশুরা যাতে মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং একত্ববাদ ও সমাজে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হয়-এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখে ‘মাওলানা আব্দুল লতিফ (রহ.) ফাউন্ডেশন’ এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
গ্রিদান টেংগা গ্রামের মাওলানা আব্দুল লতিফের কাতার প্রবাসী ছেলে মাওলানা মাহমুদুল হাসানের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তার সহযোগী উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছেন কাতার প্রবাসী মাওলানা এনামুল হাসান আরিফ এবং মাওলানা নাজমুল হাসান তারিফ।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতায় শর্ত ছিল ১২ থেকে ২৫ বছর বয়সি শিশু-কিশোরদের স্থানীয় গ্রিদান টেংগা জামে মসজিদে জামাতের সঙ্গে টানা ৪০ দিন ধারাবাহিকভাবে নামাজ আদায় করা এবং নামাজের প্রয়োজনীয় ১০টি সুরা সহিহ-শুদ্ধভাবে মুখস্থ করা। পুরস্কার হিসেবে তাদের প্রত্যেককে একটি করে বাইসাইকেল দেওয়া হবে।
প্রতিযোগিতায় সাড়া দিয়ে প্রথম দিকে অন্তত ৪৫ জন শিশু-কিশোর নামাজ আদায় শুরু করলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে ২১ জন টিকে থেকে বিজয়ী হয়েছে। স্থানীয় ও ঢাকা থেকে আগত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বুধবার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা কাতার প্রবাসী মাওলানা মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমান আধুনিক যুগে অধিকাংশ শিশুই মোবাইল, টিভি এবং ল্যাপটপের স্ক্রিনে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে। শিশুদের মোবাইল আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুর মধ্যেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। শিশুরা যাতে নিয়মিত মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারে এবং শিশুদের মধ্যে যাতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে আগ্রহ সৃষ্টি হয়-এমন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু অংশ নিলেও তাদের থেকে ২১ জন বিজয়ী হয়েছে।
সহযোগী উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান তারিফ অনুভূতি জানিয়ে বলেন, পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সাইকেল চালিয়ে শিশুদের শারীরিক ব্যায়ামের কাজ সম্পন্ন হবে এবং শিশুরা সুন্দর সময় কাটাতে পারবে-এতে তাদের মাঝে মোবাইল, অনলাইন গেম, টিভি আসক্তি কিছুটা হলেও কমবে এবং শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে ইনশাআল্লাহ! সর্বোপরি নৈতিকতায় আমরা আমাদের গ্রামকে একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি-সেই থেকে এই আয়োজন।