মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমনে ৭০ বছরের রেকর্ড ভাঙল
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২১, ১২:৫৪ এএম
ছবি: যুগান্তর
করোনা মহামারির মধ্যেই দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা ৭০ বছরের নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিদায়ী অর্থবছর (২০২০-২১) মোংলা বন্দরে সর্বোচ্চ ৯৭০টি জাহাজ আগমনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টির পাশাপাশি এ সময়ে রেকর্ড পরিমাণ ১১৯ দশমিক ৪৫ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডলিংও (ওঠানামা) খালাস করেছে।
রিকন্ডিশন গাড়ি এসেছে ১৪ হাজার ৪৪৭টি, যা থেকে মোংলা বন্দর রেকর্ড পরিমাণ ৩৪০ কোটি টাকা আয় করেছে। একই সময়ে ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ কোটি টাকা বেশি।
রোববার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা এসব তথ্য তুলে ধরে বলেন, আগামী অর্থবছরে মোংলা বন্দরে ৩৬০ কোটি টাকা আয়, জাহাজ আগমন এক হাজারেরও বেশি ও নিট মুনাফা ১৫০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বিগত ২০০১ থেকে ২০০৮ অর্থবছর পর্যন্ত মোংলা বন্দর নানামুখী প্রতিকূলতার কারণে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। বিগত ২০০৭-০৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতটি জাহাজ ও পূর্ণ অর্থবছরে মোট ৯৫টি জাহাজ আগমন করেছিল।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দেন। শুরু হয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ। তাই ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হয়ে ওঠায় প্রতি বছর বিদেশি জাহাজের আগমনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
পদ্মা সেতু, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র খানজাহান আলী বিমানবন্দর, রেললাইন ও পশুর চ্যানেলের ইনার বারের খননসহ মোংলা বন্দরের চলমান ৯টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যতা আরও অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আউটার বারের খননকাজ সম্পন্ন হওয়ায় বড় বড় জাহাজ সরাসরি চ্যানেলে অবস্থান ও জেটিতে ভিড়তে পারছে। ফলে এ বন্দর ব্যবহারে দিনকে দিন আগ্রহী হচ্ছেন দেশি-বিদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকরা। বন্দর উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ চলছে এবং এটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দর দেশের অর্থনীতি ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন এম আবদুল ওয়াদুদ তরফদার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. শাহিনুর আলম, হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন, প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান, পরিকল্পনা প্রধান মো. জহিরুল হক, পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল, প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল ও হাইড্রোলিক) মো. শওকত আলী, উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান মিনা ও বন্দর চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. নিয়ামুর রহমানসহ বাগেরহাটে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।