Logo
Logo
×

সারাদেশ

শরীয়তপুরে আ’লীগ নেতা ও তার ভাই হত্যার রায় মঙ্গলবার

Icon

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২১, ১২:৫৪ এএম

শরীয়তপুরে আ’লীগ নেতা ও তার ভাই হত্যার রায় মঙ্গলবার

সাবেক পিপি হাবিবুর রহমান। ছবি: যুগান্তর

দীর্ঘ ২০ বছর পর শরীয়তপুরের বহুল আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগে নেতা ও জজকোর্টের সাবেক পিপি হাবিবুর রহমান ও তার ভাই যুবলীগ নেতা মনির হোসেন মুন্সি হত্যার রায় আগামীকাল মঙ্গলবার ঘোষণা করা হচ্ছে।

রায় ঘোষণা করবেন শরীয়তপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন।

শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের পিপি মির্জা মো. হযরত আলী জানান, শরীয়তপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন অগামীকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও জজকোর্টের সাবেক পিপি হাবিবুর রহমান এবং তার ভাই যুবলীগ নেতা মনির হোসেন মুন্সির হত্যার রায় জানানোর কথা রয়েছে।

এ মামলায় ৫৫ আসামির মধ্যে ২৬ জন কারাগারে আছেন। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ২৬ আসামি পলাতক রয়েছে।

মামলার এজাহার ও বাদীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ (পালং-জাজিরা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও জাজিরা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার।

আর স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছিলেন কেএম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব। তখন আওরঙ্গের পক্ষে অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ।

২০০১ সালে ১ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সংঘর্ষের কারণে কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়। স্থগিত হওয়া সেই নির্বাচন নিয়ে ৫ অক্টোবর শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং উত্তরবাজার এলাকার হাবীবুর রহমানের বাসভবনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে একটি সভা চলছিল।

সেখানে হামলা চালান স্বতন্ত্র প্রার্থী আওরঙ্গ-সমর্থক যুবলীগের সাবেক নেতা সরোয়ার হোসেন বাবুল তালুকদারের লোকজন। তার ভাই মঞ্জুর হোসেন মন্টু তালুকদার সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়। কিছুক্ষণ পর ওই বাসভবনে আবার হামলা হয়। তখন হাবীবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে খুন করে।

হাবীবুর রহমান তখন শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার ছোটভাই মনির হোসেন মুন্সি ছিলেন শরীয়তপুর পৌরসভা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ব্যবসায়ী।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাবীবুর রহমানের স্ত্রী জিন্নাত হাবীব রহমান আওরঙ্গকে প্রধান আসামি করে মোট ৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে তৎকালিন (পাংল জাজিরা) শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আওরঙ্গের নাম বাদ দিয়ে ২০০৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

মামলার বাদী তখন আদালতে নারাজি দেন। আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর পর জিন্নাত রহমান উচ্চ আদালতে রিট করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন আওরঙ্গ।

২০১৩ সালের ৩ আগস্ট এক সড়ক দুর্ঘটনায় আওরঙ্গ মারা যান। এর পর উচ্চ আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দেন পুলিশকে। পুলিশ ২০১৩ সালের অক্টোবরে আদালতে ৫৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

আওরঙ্গ ছাড়াও ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শাহজাহান মাঝি ও স্বপন কোতোয়াল মৃত্যুবরণ করেছেন। আর মামলার চার আসামি পালিয়ে বিদেশ চলে গেছেন বলে শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের পিপি মির্জা মো. হযরত আলী জানিয়েছেন।

হাবীবুর রহমানের ছেলে জজকোর্টের এপিপি ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান বলেন, আমার বাবা ও চাচার হত্যার বিচার দেখার জন্য ২০ বছর ধরে অপেক্ষায় আছি। এ ২০ বছর অনেক কষ্ট ও চাপের মধ্য দিয়ে আমাদের দিন কাটাতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার পরিবারের পাশে ছিলেন বলেই আমরা টিকে রয়েছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, নিশ্চয়ই হত্যাকারীরা কঠিন শান্তি পাবে।

শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের পিপি মির্জা মো. হযরত আলী বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে, আদালত আগামীকাল মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করার দিন ধার্য করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম