ধর্মান্তরিত নারীকে বছরের পর বছর একঘরে
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৭:৫৭ এএম
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষণপাড়া গ্রামে করফুল সরকার (৪৭) নামে এক নারীকে বছরের পর বছর একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম, আবার মুসলিম ধর্ম ত্যাগ করে পুনরায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করায় গ্রাম্য মাতবররা এমনটি করেছেন। এমনকি কেউ তার সঙ্গে কথা বললে তাকেও একঘরে করে রাখার হুমকি দেয়া হয়।
ওই গ্রামের বর্মা নন্দন সরকারের মেয়ে করফুল সরকার জানান, কয়েক বছর পূর্বে তিনি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে চানপাড়া গ্রামের ইসলাম ধর্মাবলম্বী রবিউল্লার ছেলে কাজল মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আড়াই বছর সংসার করার পর দুইজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফলে করফুল সরকার আদালতের মাধ্যমে মুসলমান স্বামীকে তালাক দেন।
তিনি বলেন, পরে এভিডেভিটের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে পুনরায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন করফুল সরকার। এরপর থেকে তিনি বাবার বাড়ি বিদ্যাভূষণপাড়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু বিষয়টিতে বাদসাধেন বিদ্যাভূষণপাড়ার মাতবর দৈত্য সরকারের ছেলে নকুল সরকার। তিনি এলাকার হিন্দু নারী-পুরুষদের ওই নারীর সঙ্গে কোনো প্রকার সম্পর্ক এবং কথাবার্তা না বলতে নির্দেশ দেন। কেউ তার আদেশ অমান্য করলে তাকেও একঘরে করার হুমকি দেন তিনি। তাই কেউ তার সাথে মাতবরের ভয়ে কথা বলে না।
তিনি দাবি করেন, তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে খড়ের গাদায় আগুন দেন মাতবর নকুল সরকার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত মাতবর নকুল সরকার একঘরে করে রাখা ও খড়ের গাদায় আগুন দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা আখ্যায়িত করে বলেন, করফুল একবার হিন্দু ধর্ম ছেড়ে মুসলমান ছেলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। তার সন্তানও হয়েছে। এখন আবার মুসলমান স্বামীকে ছেড়ে চলে এসেছে। কিন্তু হিন্দু সমাজের নিয়ম-কানুন মেনে সমাজে উঠেনি। তাই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজে উঠে সামাজিকভাবে পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।