সালথায় মসজিদের ওয়াক্ফ এস্টেটের জায়গা বিক্রির অভিযোগ

ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৩ পিএম

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের রাহুতপাড়া এলাকায় মসজিদের ওয়াক্ফ করা জায়গা দখল করে বিক্রির অভিযোগ
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের রাহুতপাড়া এলাকায় মসজিদের ওয়াক্ফ করা জায়গা দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সহিদুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সহিদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিকার পেতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করলে সালথা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল গত ২২ সেপ্টেম্বর তার কার্যালয়ে সহিদ চৌধুরীকে উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেন। তিনি বিএস খতিয়ান ছাড়া উপযুক্ত কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, রসুলপুর বাজার সংলগ্ন ১১৮নং রাহুতপাড়া মৌজার ১৩৯নং খতিয়ানের ২৯৭নং দাগের মসজিদের নামে ওয়াক্ফ করা ৭ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক দখল করে সহিদ চৌধুরী। এর মধ্যে ৩ শতাংশ জমি ইতোমধ্যে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ১১৮নং রাহুতপাড়া মৌজার বিএস ১৩৯নং খতিয়ানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমি সহিদ চৌধুরী নিজ নামে অবৈধভাবে রেকর্ড করে বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রির পাঁয়তারা করছেন।
স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, জমিদার মৈজদ্দিন বিশ্বাস ও খান সাহেব চৌধুরীদের নামে এই এলাকায় ১০১ একর জমি ছিল। এসব জমির খাজনা ও কৃষিকাজ থেকে যে টাকা পাওয়া যেত তা জমিদার মৈজদ্দিন বিশ্বাস এবং খান সাহেব চৌধুরীরা পেতেন। এরই মাঝে বর্তমান দখলকারী সহিদ চৌধুরীর পিতা মৃত সামচুল হক চৌধুরী দখল মূলে জমিদারদের বেশ কিছু জমি বিএস রেকর্ড করে নেন। এসব জমির মধ্য থেকে কিছু জমি আগে বিক্রি করেছেন এবং বর্তমানে বাকি জমিগুলো বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। বর্তমানে জমিদার মৈজদ্দিন বিশ্বাসদের কিছু জমি মসজিদ এবং স্কুলের নামে ওয়াক্ফ এবং দান করা জমি এই সহিদ চৌধুরী বিক্রি এবং বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। ইতোমধ্যে রাহুতপাড়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের মধ্যে খুঁটি পুঁতে তাতে লাল রং করে আলাদা করে রেখেছেন। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব ভূমি জালিয়াতি ও দুর্নীতির বিষয়ে সহিদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। মসজিদ এবং স্কুলের দানকৃত ও ওয়াক্ফ করা জায়গা দখল করে যাতে বিক্রি করতে না পারে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান গ্রামের সচেতন ব্যক্তিরা।
সহিদ চৌধুরী বলেন, ৬০ থেকে ৭০ বছর ধরে আমরা ভোগদখল করে আসছি। নিয়মিত খাজনা দিচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা একেবারেই মিথ্যা।
এ বিষয়ে মৈজদ্দিন বিশ্বাসের উত্তরসুরি, ওয়াক্ফ’র মোতাওয়াল্লি সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, মৈজদ্দিন বিশ্বাসের জমিদারির কিছু অংশের খাজনা তুলতেন সহিদ চৌধুরীর পিতা। বর্তমানে তার ছেলে সহিদ চৌধুরী সেই ওয়াক্ফ জমিগুলো জালিয়াতি করে বিক্রির চেষ্টা করছেন।