Logo
Logo
×

সারাদেশ

তিন যুগ অন্যের রান্না ঘরে বসবাস শহীদের স্ত্রী বকুলের

Icon

বিলাস দাস, পটুয়াখালী (দ.)

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫৬ এএম

তিন যুগ অন্যের রান্না ঘরে বসবাস শহীদের স্ত্রী বকুলের

১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর গুলিতে শহীদ সুখুরঞ্জনের বৃদ্ধ স্ত্রী বকুল বালা দীর্ঘ তিন যুগ অন্যের রানা ঘরে বসবাস করে আসছেন। স্বামী হারা অসহায়-সম্বলহীন এই নারীর খোঁজ রাখেনি কেউ। দীর্ঘ দিনেও কোনো সরকারি অথবা দাতা সংস্থার সহযোগিতা পায়নি তিনি।

প্রতিবেশীর বাড়িতে ভিক্ষাবৃত্তি করে আজ বৃদ্ধের কোঠায় দাঁড়িয়েছে বকুল বালা। আবাসস্থল বিনা এই বৃদ্ধ পটুয়াখালী সদর উপজেলা মৌকরনের ললিত হাওলাদারের বোনের বাড়িতে থাকেন। বকুলের বোন দারিদ্র গোলাপিও বকুলকে নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। 

বৃদ্ধ বকুল বালা ও তার বোন জানায়, বকুল বালার অসচ্ছল-দারিদ্র্য পিতা বিশ্বেশ্বর দেবনাথ তাকে মাত্র তেরো বছর বয়সেই বিয়ে দেন সুখুরঞ্জনের। আজ থেকে অন্তত ৫০ বছর পূর্বে পায়ে আলতা ও লাল বেনারসি পরে স্বামী সুখুরঞ্জনের ঘরে আসেন তিনি। স্বামী সুখুরঞ্জন পেশায় ছিলেন একজন মৌসুমি শ্রমিক। যখন যে কাজ পেতো তাই করে সংসার চালাতে হতে তাকে।

মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময় চারদিক জুড়ে পাক সেনাদের গোলা-গুলির শব্দ আর খুন-লুণ্ঠনের ঘটনায়ও আতংক ছড়ালেও সংসারের ভরনপোষণের জন্য কাজের খোঁজে জেলা শহরে গিয়েছিলেন সুখুরঞ্জন। ওই দিনই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পাকবাহিনীর গুলিতে ক্ষত-বিক্ষত হয় সুখুরঞ্জনসহ অন্তত ১৫ জন শ্রমিকের বুক। গুলি করে হত্যার পর লাশটির শেষ কার্যও হয়নি।

স্বামী মারা যাওয়ার পর পিত্রালয়ে আশ্রয় নেয় বকুল। বার্ধক্যজনিত কারণে বাবা বিশ্বেশ্বরও মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর অসহায় বকুল বালাকে আশ্রয় দেয় বোন গোলাপি। কিন্তু গোলাপির স্বামীর পরিবারটিও অসচ্ছল-দারিদ্র হওয়ায় বকুল বালার ভরণপোষণ নিয়ে বিপাকে পরেছেন তারা। নিঃসন্তান এই বকুল বোনের রান্না ঘরে ৫০ বছর কাটিয়ে দিল।

বোন গোলাপি জানান, বিগত দিনে তাদের গ্রামের যাদের ঘর দেয়া হয়েছে তারা সচ্ছল। অথচ মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদের স্ত্রীর জন্য একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয় না। স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধির কাছে ধর্না ধরেও সহায়তা মেলেনি।

বকুল প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘর দাবি করছেন। তিনি বলেন, বোনের রান্না ঘরটি বসবাসের অযোগ্য। তাই বর্তমান সময়গুলো খুব কষ্টে কাটাতে হয়। 

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. নজরুল ইসলাম বাদল বলেন, বকুল দীর্ঘ তিন যুগ ধরে তার গ্রামের বাসিন্দা গোলাপি রানীর রান্না ঘরে বসবাস করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি কোনো সহায়তা পাননি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার জন্য একটি বসতঘর প্রার্থনা করছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম