শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো বেগুনি রঙের ধান চাষ
সৈয়দ সালাউদ্দিন, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:০৮ এএম
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক কৃষক প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন বেগুনি পাতার ধান। এতে করে ব্যাপক সাড়া পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
কৃষক মো. ছালেহ আহমদ জানান, যদি ফলন ভালো হয়, তবে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এ ধানের চাষ করবেন তিনি।
কৃষি বিভাগ বলছে, এই ধানের আয়ুষ্কাল একটু কম। যদি ফলন আশানুরূপ হয়, তবে সৌখিন কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে এই জাতের ধান।
চারপাশে সবুজ ধানের সমারোহ। মাঝখানে বেগুনি রঙের পাতার ধানক্ষেত। যে কেউ প্রথম দর্শনে ধান ভাবতে অবাক হবেন।
চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেতের মধ্যে বেগুনি রঙের এ ধান গাছ দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। এমনই বেগুনি পাতার ধান চাষ করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের তিতপুর গ্রামের কৃষক মো. ছালেহ আহমদ।
তিনি জানান, মৌলভীবাজারে তার মামাতো ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তিনি তার বেগুনি ধান চাষ করতে দেখে মুগ্ধ হয়ে এ জাতের ধানের প্রতি আগ্রহ জাগে। পরে মামাতো ভাইয়ের মাধ্যমে তিনি এ জাতের বীজ সংগ্রহ করে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে এই ধান চাষ করেছেন নিজ এলাকায়।
এ জাতের ধানের নাম দিয়েছেন সুবর্ণা ইরি ধান। তিনি আরও জানান, জমিতে বীজ রোপণের পর খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয়নি। সারও লেগেছে কম। আশপাশের অনেক মানুষ আসছেন তাদের ধানক্ষেত দেখতে। অন্য ধানের চেয়ে ফলন বেশি পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
দ্রুত ফলন দেয়ায় এই জাতের ধানে রোগ বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না। গাছ শক্ত হওয়ায় ঝড়বৃষ্টিতেও হেলে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সৌখিন কৃষকরা এই জাতের ধান চাষ করতে পারেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, নতুন চাষ শুরু হওয়া এ ধানের নাম পার্পল লিফ রাইস। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের রঙ সোনালি ও চালের রঙ বেগুনি।
উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একরপ্রতি ফলনও বেশ ভালো।
একরপ্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটি আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার প্রথমবারের মতো শ্রীমঙ্গলে চাষ হচ্ছে।
একজন চাষি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে।
ধানক্ষেতটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন এর ফলন কেমন হবে, তা জানতে ধানকাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ধান বোরো মৌসুমের জাত।