বগুড়ায় ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করেও চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি। খাদ্য বিভাগ এ ব্যর্থতার জন্য চুক্তিভুক্ত মিলারদের দায়ী করছে। আর মিলাররা বলছেন, বাজার দর বেশি হওয়ায় এটা হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এসএম সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার শেষ দিন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ সংগ্রহ হয়েছে। চুক্তি করেও ধান-চাল না দেওয়া মিলারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বগুড়া খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ৩৪ হাজার ৮৬৬ টন ধান এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে ৭১ হাজার ৮৪৮ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়। এক হাজার ৯৬০ জন অটো ও হাসকিং চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। গত ৩১ আগস্ট ধান-চাল সংগ্রহের শেষ দিন ছিল।
সংগ্রহ সন্তোষজনক না হওয়ায় খাদ্য বিভাগ ১ সেপ্টেম্বর সময় ১৫ দিন বৃদ্ধি করে। সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ সময় পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৪২ হাজার ৮৮ টন। আর ধান সংগ্রহ হয়েছে ২২ হাজার ৬৩৪ টন। সংগ্রহের পরিমাণ ৬০-৬৫ শতাংশ।
সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ প্রসঙ্গে খাদ্য বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের দাম ৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজার দর ছিল ৩৯-৪০ টাকা। আবার ধান প্রতিকেজি ২৬ টাকা (চিটামুক্ত ও আর্দ্রতা ১৪%)। কিন্তু কৃষকদের এ মান নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রতি কেজি ধানের দাম পড়বে ২৭-২৮ টাকা। তাই তারা কষ্টার্জিত ধান-চাল অতিরিক্ত দরে হাট-বাজারে বিক্রি করেছেন। মিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে চাল-ধান কিনতে না পেরে খাদ্য বিভাগে সরবরাহ দিতে পারেনি। ফলে খাদ্য বিভাগ তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি বগুড়ার কাহালু শাখার সভাপতি আলী আহমেদ জানান, অনেক মিল মালিক তাদের লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। এ জেলায় ধান-চালের বাজার দর বেশি হওয়ায় তিনি ও তার মতো অনেক মিলার বৃহত্তর রংপুর থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করে খাদ্য বিভাগে সরবরাহ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অনেক চালকল মালিকের ধারণা ছিল ধানের দাম কমবে। তখন তারা খাদ্য বিভাগের চুক্তি পূরণ করবেন কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি।
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন সংগঠনের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এটিএম আমিনুল ইসলাম।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এসএম সাইফুল ইসলাম জানান, ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করেও চলতি ইরি-বোরোর ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি। তিনি এজন্য চুক্তিবদ্ধ মিলারদের দায়ী করে বলেন, ব্যর্থদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।