ভয়ভীতি দেখিয়ে কর্মকর্তাকে দিয়ে নিজের কাজ করান অফিস সহকারী!

নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৪ পিএম

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তার পদবি অফিস সহকারী হলেও কর্মকর্তার ওপর ক্ষমতার প্রভাব ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ করেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সম্প্রতি লোহাগড়া উপজেলার পিআইও এসএমএ করিম নিজেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগটি তদন্তপূর্বক আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের প্রশাসনিক উপপরিচালক (প্রশাসন-২) ড. মো. হাবিব উল্লাহ বাহার তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নড়াইল জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারী মো. মনিরুজ্জামান নিজ এলাকাতেই কর্মরত থাকায় কর্তব্যে খামখেয়ালিপনা ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে থাকেন। অফিসে আসা মানুষদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত অশোভন আচরণ করে থাকেন। এছাড়া তিনি পেশিশক্তির প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতির নাম ঠিক রেখে নিজেই কাজ করে অনৈতিকভাবে লাভবান হন।
এভাবে অফিস সহকারী মো. মনিরুজ্জামানের স্বজনপ্রীতি, লোকদের সঙ্গে নিজে কাজে জড়িত থাকার নথিগুলো স্বাক্ষরের জন্য পিআইওর কাছে উপস্থাপন করেন। নিয়মবহির্ভূত ওই নথিগুলোতে সঠিকভাবে স্বাক্ষর না করলে পিআইও এসএমএ করিমের ওপর স্থানীয় প্রভাবশালী লোকদের দিয়ে প্রভাব খাটান অফিস সহকারী।
অফিস সহকারী মো. মনিরুজ্জামানকে এসব অপকর্ম থেকে বিরত থাকার কথা বললে তিনি পিআইও করিমের ওপর চড়া হয়ে স্থানীয় লোকজনদের লেলিয়ে দিয়ে অপমান ও লাঞ্ছিত করেছেন। এমনকি ধূর্ত অফিস সহকারী মনিরুজ্জামান উপজেলা কর্মচারী সমিতিকে ব্যবহার করে পিআইওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন।
তিনি ইতোপূর্বে নড়াইল সদর উপজেলা পিআইও অফিসে বদলি হয়ে যান। বদলির অল্প কয়েক দিন পর প্রভাব খাটিয়ে তদবির করে পুনরায় নিজ উপজেলা লোহাগড়ায় বদলি হয়ে আসেন।
এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএমএ করিম যুগান্তরকে বলেন, মো. মনিরুজ্জামান আমার অধীনে কর্মচারী হলেও প্রভাবশালী মহলের চাপে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তার পদবি অফিস সহকারীর হলেও তার ক্ষমতা আমারও ওপরে। তিনি নিজ এলাকায় একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন কর্মরত থেকে পাহাড়সম অনিয়মে জর্জরিত হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিতে পারেননি। যে কারণে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তার অনিয়মের তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. মনিরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে অহেতুক হয়রানি করার জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।