
প্রিন্ট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৬ এএম
চলনবিলে নৌকা ভ্রমণের আড়ালে অশ্লীল নৃত্য জুয়া মাদক

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:৪৩ পিএম

আরও পড়ুন
পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল এলাকায় নৌ-ভ্রমণের আড়ালে নৌকায় জমজমাটভাবে চলছে অশ্লীল নৃত্য, জুয়া ও মাদকের আসর। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পিকনিক ও নৌকা ভ্রমণের নামে নর্তকিদের ভাড়া করে এনে অশ্লীল কার্যকলাপে মত্ত হয়ে ওঠেন।
নৌকার মধ্যেই বসানো জুয়া ও মাদকের আসর। অ-থৈ পানির মধ্যে নৌকায় চেপে এসব অপকর্ম হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেপরোয়াভাবে চলছে এসব কার্যক্রম। এতে বিলপাড়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধান ও সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও তাড়াশ থানা এলাকা থেকে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে পড়েন নৌকা ভ্রমণে। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার রান্না হয় নৌকাতেই। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নর্তকি ও অখ্যাত কণ্ঠশিল্পীদের ভাড়া করে আনা হয়। এরপর উচ্চস্বরে গান-বাজনার তালে তালে নৌকার মধ্যেই চলে অশ্লীল নৃত্য। পাশাপাশি বসে জুয়া ও মাদকের আসর।
এ ধরনের নৌকাগুলোর বেশিরভাগ অংশ কৌশলে পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখেন নৌকার মালিকেরা। আর এসব অপকর্মের হোতাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু লোকজন। এতে ছুটির দিনে বা অন্য কোনো দিনে চলনবিল এলাকায় ভ্রমণে আসা পর্যটক বা পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে আসা লোকজনকে নানাভাবে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেড়েই চলেছে এমন অপরাধ কর্মকাণ্ড- এমন অভিযোগ বিলপাড়ের মানুষের।
পাবনা শহর থেকে চলনবিলে ঘুরতে আসা আল আমিন হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী যুগান্তরকে বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে বাড়ি থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে চলনবিল দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু বেশিরভাগ নৌকায় যেভাবে অশ্লীলতা চলছিল তাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। শুধু আল আমিন হোসেনই নয়, এমন অভিযোগ বিলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে আসা হাজারও মানুষের।
জানতে চাইলে চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এ ব্যাপারে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এই প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। তবে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান যুগান্তরকে বলেন, গত আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিষয়টি উঠেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত)। আমি তাকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলাম। তবে এরপর এ ধরনের কার্যক্রম হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।