Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুড়িগ্রামে অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না মুক্তিযোদ্ধার

Icon

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৪২ পিএম

কুড়িগ্রামে অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না মুক্তিযোদ্ধার

কুড়িগ্রামের উলিপুরে অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না মতিয়ার রহমান (৬৭) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার। পরপর দুইবার স্টোক করার কারণে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি সুচিকিৎসার অভাবে এখন শয্যাশয়ী। 

তিনি শেখ হাসিনাকে দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাদের বড়বোন হিসেবে দাবি করে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের জুম্মাহাট কেবলকৃষ্ণ গ্রামের হানিফ উদ্দিন মুন্সির ছেলে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পর পুলিশের হাবিলদার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বর্তমানে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

এ অবস্থায় দীর্ঘ চার বছর ধরে শরীরের ডান সাইড প্যারালাইজড-ব্রেইন স্ট্রোক, হাই প্রেসার, ডায়াবেটিস ও পায়ে ঘাসহ নানা জটিল রোগ নিয়ে শয্যাশয়ী অবস্থায় অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি চলাফেরা করতে পারেন না।  

মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের খোঁজ নিতে তার বাড়িতে গেলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতার টাকায় তার সংসারের খাওয়া-পরার সংস্থানই যেখানে ঠিক মতো চলে না, সেখানে চিকিৎসার ব্যয়ভার মিলবে কোথা থেকে। 

তিনি আরও বলেন, সংসারে স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। অর্থের অভাবে ছোট ছেলে নাজমুল হাসান অনার্সে অধ্যায়নরত থাকা অবস্থায় মাঝপথে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। একই কারণে ছোট মেয়ে মার্জিয়া জান্নাত ডিগ্রি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধার চেক ও পুলিশ ভাতার বই বন্ধক রেখেছেন। 

পরিবারের শেষ সম্বল পঞ্চাশ শতক জমিও বন্ধক রেখেছেন। বর্তমানে জরাজীর্ণ কুঠিরে বসবাস তার। তাই তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান যুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর উলিপুরে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারীদের মধ্যে তিনিও একজন। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে তিনি পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে হাবিলদার হিসেবে অবসরে যান। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমী আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জরুরিভিত্তিতে তার আবেদনটি পাঠানো হবে। উনি প্রকৃতপক্ষেই খুব অসুস্থ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে পূর্বেও তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুক সম্ভব আমরা সহযোগিতা করে যাব।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম