শেরপুরে বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনের কবলে ৩৫ গ্রাম

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:৪৭ পিএম

সীমান্তবর্তী বগুড়ার শেরপুর-ধুনট উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঙালি নদীর পানি বর্ষা মৌসুমে কানায় কানায় ভরা থাকে। অনেকাংশে নদীর পাড়ও ডুবে যায়। তবে নদীতে পানি আসার ও কমার সময়ে নদী ভাঙন শুরু হয় বেশি।
এখন এ নদীর পানি কমতে থাকলে ভাঙছে নদীর পাড় ও তীরবর্তী বসতবাড়ি, আবাদি জমি। বাঙালি নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে এ দুই উপজেলার প্রায় ৩৫টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নানা শঙ্কায় রয়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসরত হাজারও মানুষ।
তবে এ ভাঙন রোধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাছাড়া পানি উন্নয়নের বোর্ডের নদী ভাঙন রোধে উদাসীনতায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নদীপাড়ের মানুষেরা।
জানা গেছে, জেলার শেরপুর-ধুনট উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা উত্তর-পশ্চিম পাশ দিয়ে স্রোতস্বিনী বাঙালি নদী। ধুনট উপজেলার উত্তরের সাঁতবেকি গ্রাম থেকে দক্ষিণে সীমাবাড়ী (মধ্যভাগ) গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটার নদীপথ। নদীর দুই পাশে তীরবর্তী ৩৫টি গ্রাম।
এগুলো হলো- সাঁতবেকি, পিরাপাট, ডেকরাঘাট, ধামাচামা, জয়শিং, নান্দিয়ারপাড়া, বেড়েরবাড়ী, নাংলু, ফরিদপুর, নিমগাছি, বিলচাপড়ি, হেউডনগর, হাসাপোটল, রামনগর, রাঙ্গামাটি, বিলনোথাড়, ঝাঁঝর, শৈলমারী, নলডেঙ্গী, বরইতলী, নবীনগর, বথুয়াবাড়ী, বিলকাজুলী, চকধলী, শাকদহ, পেচিবাড়ী, চক কল্যানী, বিনোদপুর, জোরগাছা, জয়লা, সুত্রাপুর, সুঘাট, আওলাকান্দি, নলুয়া, মধ্যভাগ (চান্দাইকোন) গ্রাম।
এ দুই উপজেলার ৩৫টি গ্রামে কমপক্ষে ২২ বছর ধরে বাঙালি নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে জয়শিং, নিমগাছি, পেচিবাড়ি, রামনগর, ফরিদপুর, ঝাঝর (হিন্দুপাড়া), বিনোদপুর গ্রামে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতিপূর্বে নদীভাঙনে এসব গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অব্যাহত নদী ভাঙনে অনেকটাই বদলে যাচ্ছে নদীপাড়ের এলাকার মানচিত্র, পাল্টে যাচ্ছে জীবনযাত্রা।
বর্তমানে বাঙালি নদীর পানি কমতে থাকায় ও পানিতে ঘূর্ণায়নের সৃষ্টি হয়ে ভাঙন আগ্রাসী রূপধারণ করে প্রবল স্রোত। আর এ স্রোত ধেয়ে আসছে বসতভিটা ও আবাদি জমির দিকে। এর ফলে নদী গ্রাস করছে নতুন নতুন এলাকা, বিলীন হচ্ছে জনপদ, কমে আসছে আবাদি জমি, পাল্টে যাচ্ছে নদীপাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার ধরন।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক বলেন, বাঙালি নদীর ভাঙনরোধে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভরা মৌসুম কিছু কমলেই ভাঙন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।