সখীপুরে নৃত্যশিল্পীকে মারধর করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ, মামলা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২০, ০৭:৪৯ এএম
সন্ত্রাসীগ্রুপ
টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌর এলাকার জামতলায় নৃত্যশিল্পী সুমন আহমেদকে (১৯) বেধড়ক মারধর ও উলঙ্গ করে ভিডিও করায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর দুই আসামি গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামিসহ তিনজন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা বাদীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে। লাঞ্ছিত নৃত্যশিল্পী সুমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নৃত্যশিল্পী সুমন আহমেদ জানান, তিনি বাড়িতে যাওয়ার সময় জামতলা এলাকায় আসামিরা তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে গতিরোধ করে। পরে প্রধান আসামি কালা শরীফের নির্দেশে ভয় দেখিয়ে সুমন আহমেদকে আসামিরা মোটরসাইকেলে তুলে জামতলা লিচুবাগানে নিয়ে যায়।
সেখানে আসামিরা সুমন আহমেদকে কিল, ঘুষি, চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। এরপর জোরপূর্বক তার শরীরের সব কাপড়-চোপড় খুলে নাচতে বলে। নাচতে রাজি না হওয়ায় সুমনকে মারধর করে। সুমন আহমেদ আসামিদের কাছে ক্ষমা চাইলে, তারা আরও মারধর করতে থাকে। এক সময় বাধ্য হয়ে সুমন উলঙ্গ হয়ে নাচতে শুরু করলে আসামিরা তার নাচের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে।
এ বিষয়ে সুমন বাদী হয়ে ৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হল- উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের জলিল তালুকদারের ছেলে কালা শরীফ (২৫), সখীপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে প্রিন্স মাহমুদ (২০), কালিদাস গ্রামের মো. হাসিব মিয়া (১৯), সফি মিয়ার ছেলে সুপ্ত (১৬), মো. মামুন মিয়া (২২)। মামলার পর প্রিন্স ও মামুন গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামিসহ অন্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এদিকে বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগও রয়েছে।
সুমন আহমেদ বলেন, আসামিদের সাথে আমার কোনো পূর্বশত্রুতা নেই। মামলার পর আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। পদক্ষেপ না নেয়ায় উল্টো আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফর রহমান শুক্রবার জানান, মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যে মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিওদৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল সেই মোবাইলটি উদ্ধার করে সিআইডির কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। সিআইডি রিপোর্ট পাওয়ার পর মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।