থানায় রাখা হচ্ছে বিদেশি কুকুর দুটি
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০, ০৯:০১ এএম
মহাসড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। গ্রামের চৌরাস্তার কাছে পৌঁছতেই সামনে দৌড়ে এলো গলায় শিকল পরানো বিদেশি জাতের দুটি সাদা রঙের কুকুর। আমিতো ভয়ে আঁতকে উঠলাম। কিন্তু তারা আমার কাছাকাছি এসে লেজ নাড়িয়ে আশ্রয় পাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। বুঝলাম ইতর প্রাণী হলে কী হবে -এরা কারও পোষা ও মানুষভক্ত।
কথাগুলো বলছিলেন কুকুর নিয়ে বিপাকে পড়া ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ইশ্বরবা গ্রামের মিলন হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
মিলন হোসেন বলেন, কামড় বসিয়ে দেয়ার আশঙ্কায় আমি প্রথমে এড়িয়ে যেতে চাইলেও তারা আমার পিছু ছাড়েনি। পরে বাধ্য হলাম কুকুর দুটিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে। এক রাতেই বাড়ির সবাইকে ভালোভাবে চিনে নিয়েছিল ওরা। মনে হচ্ছিল পরিবারের সবাই যেন প্রাণী দুটির কত দিনের চেনা।
তবে বাইরের কেউ বাড়িতে প্রবেশ করলেই শত্রু ভেবে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উচ্চস্বরে হাঁকডাক দিয়ে আক্রমণ করতে যাচ্ছিল। আবার খেতে দিলেও কিছু খাচ্ছিল না। শুনলাম মাংস জাতীয় ব্যয়বহুল খাবার ছাড়া এরা কিছু খেতে চায় না কিন্তু আমি পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। আমার পক্ষে তো তাদের ব্যয়বহুল খাবার দেয়া সম্ভব নয়।
সারাদিন কাজ করে যা রোজগার করি তা দিয়ে ঠিকমতো সংসারই চালাতে পারি না। আবার বিদেশি জাতের পোষা কুকুর কোথা থেকে এলো, এটাও আমাকে অনেক ভাবাচ্ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে প্রাণী দুটির মায়ায় জড়িয়ে গেলেও ঝামেলা এড়াতে মেয়রের সহযোগিতায় কুকুর দুটিকে থানায় জমা দিয়েছি। বর্তমানে কুকুর দুটি থানা পুলিশের হেফাজতে আছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মতলেবুর রহমান জানান, এক ব্যক্তির দিয়ে যাওয়া দুটি বিদেশি জাতের কুকুর থানার একটি ঘরে রাখা হয়েছে। আশপাশের থানাগুলোতে মেসেজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আজ সোমবার পর্যন্ত ৪ দিন কেটে গেলেও এখনও মালিকের সন্ধান মেলেনি। ইতোমধ্যে একজনকে কামড়ও দিয়েছে। তারপরও অবুঝ প্রাণী কুকুর দুটির ঠিকমতো খাবারের ব্যবস্থার পাশাপাশি দেখভাল করা হচ্ছে।