জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে শেষ কৃষকের স্বপ্ন

আবদুল্লাহ জুয়েল, মনপুরা (ভোলা)
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০, ০৬:১৫ পিএম

ভোলার মনপুরা উপকূলে বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত ৪ দিনের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর আমন ও আউশের ক্ষেত। এতে জোয়ারের লবণাক্ত পানি ঢুকে তিন শতাধিক হেক্টর আমন ও আউশের জমি সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়।
এছাড়াও হাজার হাজার হেক্টর জমিতে লবণাক্ত পানি থাকায় চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষক। এতে লবণাক্ত পানিতে শেষ হচ্ছে উপকূলের হাজারও কৃষকের স্বপ্ন। এ দুর্যোগে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শসহ সহযোগিতা না পাওয়ায় কৃষকের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জোয়ারের পানিতে ১১০ হেক্টর জমির আমন, ৩০ হেক্টর জমির আউশ, আমনের বীজতলা ৫০ হেক্টর ও ৮০ হেক্টর জমির শাকসবজির বাগান সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়।
উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট গ্রামের চরমরিয়ম এলাকার কৃষক আলাউদ্দিন, জয়নাল, শামসু, মিজানসহ অনেকে বলেন, জোয়ারের পানিতে চরমরিয়মের ৩ হাজার হেক্টর আমন ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। আমাদের সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো কৃষি কর্মকর্তা কোনো পরামর্শ দেয়নি। এখন আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। সরকার কিছু না করলে আমরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
এদিকে উপজেলার সোনারচর, কাউয়ারটেক এলাকার কৃষক খোকন, করিম, ইব্রাহীম, এমরান, সোনা মিয়াসহ অনেকে জানান, জমির আইলের উপরে এখন দুই হাত জোয়ারের পানি। কীভাবে চাষাবাদ করব। জোয়ারে লবণাক্ত পানি জমে রয়েছে। আমনের বীজতলা পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাটের চরমরিয়ম বিল, সোনার চর বিল, চরযতিন গ্রামের ধানক্ষেতের বিল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এছাড়াও মনপুরা ইউনিয়নের কাউয়ারটেক, পূর্ব আন্দির পাড় ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আলমনগর, মাস্টারহাট ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চরগোয়ালিয়া গ্রামের আমন ফসলের ক্ষেত জোয়ারের পানিতে ডুবে রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী যুগান্তরকে জানান, বিগত ৪ দিনের জোয়ারের পানিতে ২৭০ হেক্টর জমির আমন ও আউশের ক্ষতি হয়। সরকারি বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সরকারি বরাদ্দ পেলে কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
জোয়ারের সময় ও এখন পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকের পরামর্শসহ সহযোগিতা করেনি- এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।