
প্রিন্ট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৯ এএম
‘বিএনপি-জামায়াত আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিলে জঙ্গি নির্মূল সম্ভব হতো’

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২০, ০৮:৪৯ পিএম

ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের কোভিড-১৯ ব্লক উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের জন্য জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না। ২০০৫ সালের এই দিনে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫ শতাধিক জায়গায় বোমা হামলা চালানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াত সরকার তখন ক্ষমতায় ছিল। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জঙ্গিরা শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছিল, জঙ্গিরা শক্তিশালী হয়েছিল। জঙ্গিরা সেই শক্তি প্রদর্শন করার লক্ষ্যেই একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছিল।
সোমবার দুপুরে নগরীর ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের কোভিড-১৯ ব্লক উদ্বোধনকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস, পরিচালক এমএ মালেক, জাহাঙ্গীর আলম খান, প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ, আরিফুল করিম, নাফিদ নবী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ হাসপাতালের কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনে অনেক দেশের চেয়ে অনেক বেশি সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। জঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব হতো যদি বিএনপি-জামায়াত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিত। ৫০০ জায়গায় একযোগে যারা বোমা হামলা চালিয়েছিল, তাদের দোসররা বিএনপির জোটের মধ্যে আছে। যারা স্লোগান দেয়- আমরা সবাই তালেবান, বাংলাদেশ হবে আফগান; তারা কিন্তু ২২ দলীয় ঐক্যজোটের মধ্যেই আছে।
তিনি বলেন, যখন কোনো জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হতো তখন বেগম খালেদা জিয়া এমন কথাও বলেছিলেন- ‘কিছু লোককে ধরে এনে আটকে রাখা হয়, যখন চুল-দাঁড়ি লম্বা হয়, তখন তাদের জঙ্গি বলা হয়।’ এভাবে জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা দিচ্ছে।
দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যতটুকু সম্ভব করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। সেটিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। শুরুতে যেভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল- করোনাভাইরাসে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে, রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকবে, হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যাবে না- এ ধরনের অনেক আশঙ্কার কথা বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন। কথায় কথায় যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তারাও বলেছিলেন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে সেই পরিস্থিতি হয়নি।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন স্বাগত বক্তব্যে হাসপাতালের কয়েকটি বিশেষ দিক তুলে ধরে বলেন, এ হাসপাতালে এক ছাদের নিচে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা রয়েছে। বিত্তবান, মধ্যবিত্ত ও অস্বচ্ছল থেকে শুরু করে সব ধরনের রোগীরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। এছাড়া দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের জন্য প্রশিক্ষণসহ আবাসিক ব্যবস্থা, দূরবর্তী রোগীর দর্শনার্থীদের থাকার সুবিধার জন্য আবাসন সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ (ইনফেকশান কন্ট্রোল), রোগীদের নিরাপত্তা এবং কর্মীদের নিরাপত্তা- এ তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সরকারি নীতিমালা অনুসরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
চট্টগ্রামের অত্যাধুনিক ৪০০ শয্যার ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে বিভিন্ন মহলের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ৫০ শয্যার সম্পূর্ণ আলাদা ব্লকে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১টি শয্যা আইসিইউ এবং এইচডিইউয়ের জন্য সংরক্ষিত। অপেক্ষাকৃত কম জটিল রোগীদের জন্য ১৭টি কেবিন রয়েছে। সংক্রমণ রোধের জন্য আলদা বহির্বিভাগ, ল্যাবরেটরি, এক্সরে ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ কর্মকর্তাদের থাকা, খাওয়া, লন্ড্রিসহ সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবস্থা আছে। তবে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসাসেবা পূর্বের মতোই অব্যাহত রয়েছে।
গত বছরের ১৫ জুন ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও ভারতের নারায়ণা হেলথের চেয়ারম্যান কিংবদন্তি চিকিৎসক ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী।