কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ৬

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২০, ০৮:১৮ পিএম

মিহাদ ও জিসান
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ইস্পাহানি ঘাট এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলা থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা গেছে দুই ছাত্র। এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- মোক্তার হোসেন (৬৭), আহমদ আলী (৬২), কাশেম (২৮), আলবি (১৭), আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও শিপলু (২৩)।
কিশোর গ্যাংয়ের হামলা থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজের সাত ঘণ্টা পর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কলেজছাত্র মিহাদ (১৮) ও স্কুলছাত্র জিসানের (১৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মিহাদ বন্দরের নাজিম উদ্দিন খানের ছেলে ও বন্দর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কমল খানের ভাতিজা এবং কদমরসুল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র। নিহত জিসান বন্দর প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি কাজিম উদ্দিনের ছেলে এবং বন্দর বিএম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র৷
দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে৷ সোমবার রাতে নিহত স্কুলছাত্র জিসানের বাবা বন্দর প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি কাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন৷
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাল্কহেডের হেলপার সুমনকে নিয়ে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বে ৩ দিন আগে ঘটনার সূত্রপাত। সোমবার বিকালে ইস্পাহানি এলাকার শামীমের রিকশা গ্যারেজ ও রনির চা দোকানে জড়ো হয় শাকিল, নজু, নাহিদ, বাবু ও রনিসহ একদল কিশোর। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অপর কিশোর গ্রুপের ওপর হামলা করে।
এ সময় ধাওয়া খেয়ে ঘাটের একটি নৌকায় ওঠে জিসান ও মিহাদ৷ কিশোর গ্রুপটিও নৌকায় ওঠে৷ ধস্তাধস্তির সময় কিশোরদের সঙ্গে নদীতে ঝাঁপ দেয় মিহাদ ও জিসান৷ অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠলেও নিখোঁজ হয় মিহাদ ও জিসান৷ রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার হয়।
নিহত মিহাদের চাচা বন্দর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কমল খান জানান, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে ইস্পাহানি ঘাট এলাকায় বিকালে স্থানীয় শামীম ও শাকিল নামের দুই কিশোর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় দুইপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত মিহাদ এবং জিসান ভয় পেয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। রাতে তারা বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কিশোরদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও নদীতে ঝাঁপ দেয়ার ঘটনা। পরে জাল ফেলে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে উদ্ধার হয় নিখোঁজ জিসান ও মিহাদের লাশ।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, মামলার বাদী কাজিম উদ্দিনের সঙ্গে আসামিদের জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতা ছিল। এর জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার বিকেলে একদল কিশোর তাদের ধাওয়া করে৷ সে সময় ওই দুই কিশোর ঘাটের একটি নৌকাতে ওঠে৷ পরে সেখানেও এই কিশোর দল উঠলে ভয়ে তারা নদীতে ঝাঁপ দেয়৷ তখন নিখোঁজ হয় তারা৷ প্রাথমিক অবস্থায় এমনটা জানা গেছে৷ রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের লাশ পাওয়া যায়৷