
প্রিন্ট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
তিতাসে তেল চুরির অভিযোগে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা!

তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২০, ০৭:০৬ পিএম

আরও পড়ুন
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় মাটি কাটার শ্রমিককে গাড়ির তেল চুরির অভিযোগ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে প্রতিপক্ষের দাবি কেড়ির বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার বিকালে পার্শ্ববর্তী দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর উত্তর বাজারে মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন জানা যায়, তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের চেঙ্গাতলী গ্রামের মৃত সায়েদ আলী মুন্সির ছেলে মো. জাকির (৫৫) পরিবারের সবাইকে নিয়ে গৌরীপুর বাজারে ভাড়া থেকে মাটি কাটার কাজ করাসহ যখন যে কাজ পান তাই করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সোমবার সকালে একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আশরাফের ছেলে মিজান মিয়া মাটি কাটা থেকে ডেকে এনে গ্যারেজে নিয়ে তেল চুরির অভিযোগ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তার শরীর থেকে সিরিজ দিয়ে রক্ত রাখে বলে অভিযোগ করে জাকিরের স্ত্রী মিনু বেগম।
পরে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে জাকিরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাজারের জান্নাত মেডিকেল সেন্টার নিয়ে গেলে ডা. মেহেদি হাসান প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে কিছুক্ষণ পরই জাকির মারা যান।
এ বিষয়ে নিহতের স্বজন দিদার বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি জাকির আহত অবস্থায় পড়ে আছেন। ঘটনা কী, মিজানের কাছে জানতে চাইলে মিজান বলে- জাকির আমার গাড়ি থেকে ১২০ লিটার তেল চুরি করেছে। তখন আমি বলি ঠিক আছে তাহলে তেলের টাকা দিয়ে দিবে তাকে ছেড়ে দে। এ সময় মিজান ইনজেকশনের সিরিজ এনে জাকিরের আঙ্গুল থেকে দুই ফোটা রক্ত রেখে ছেড়ে দেয়। আমরা জাকিরকে মেহেদি ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করাই। এর কিছুক্ষণ পরই জাকির মারা যান।
এ বিষয়ে মিজানের বাবা আলী আশরাফ চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি কেড়ির বড়ি খেয়ে মারা গেছেন। তারপরও সাংবাদিক সাহেব ভালো করে একটু খবর নেন।
মেহেদি ডাক্তার বলেন, আমার এখানে নিয়ে এলে আমি ব্যথার ইনজেকশন দিলে কিছুক্ষণ পর তিনি কোথায় যেন চলে যান; আনুমানিক ২০-২৫ মিনিট পর ফিরে এসে দোকানের সামনে বমি করতে থাকেন। এমন অবস্থা দেখে আমি সামনে গিয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলে দুর্গন্ধ পাই। মনে হল কিছু একটা খেয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি সার্কেল এএসপি আবু সালাম চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বলা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। তবে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা মামলা নেব।