সিংগাইরে নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২০, ১০:৩৩ পিএম
ফাইল ছবি
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় বন্যা আক্তার (১৫) নামে এক নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
নিহত বন্যা আক্তার উপজেলার চর চাড়াভাংগা গ্রামের সাব্বিরের স্ত্রী। সে একই ইউনিয়নের বায়রা বেপারীপাড়া গ্রামের জুলমত আলীর মেয়ে।
তবে স্বজনদের দাবি, প্রেম করে বিয়ে করায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন বন্যাকে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করেছে।
শুক্রবার ভোরে উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চর চাড়াভাংগা গ্রামের মল্লিকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রেম করে অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই যুগল ৭/৮ মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই কোর্টে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
এদিকে মেয়ের পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নিলেও ছেলের পরিবার মেনে নেয়নি। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ ও অশান্তির সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যে বন্যার নানা শ্বশুর মানসিক নির্যাতন করতো বলে মেয়ের পরিবার অভিযোগ করেন।
বন্যার মা সুফিয়া বেগমের অভিযোগ, ঈদের আগে বন্যার ননদ সেতু আক্তার বিদেশ থেকে বাড়ি ফেরেন। এসময় বন্যাকে তারা কাজের তোড়ে রাখতো, সময় মত খেতে পর্যন্ত দিত না। স্বামী ও ননদ যৌতুকের জন্য বন্যাকে মানসিক নির্যাতনও করত।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের বন্যার নানা শ্বশুর দীনু বেপারি (৫৫), নানি শাশুড়ি ছালেহা বেগম (৫২), ননদ সেতু আক্তার (২৫), খালা শাশুড়ি গংরা মিলে পাশবিক নির্যাতন করে। এতেই বন্যার মৃত্যু হয়। ওই পরিবারের লোকজন বন্যার মৃত্যুর ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন।
মেয়ে (বন্যা) অসুস্থ হয়েছে বলে তার ননদ সেতু আক্তার ভোরে ফোনে বন্যার বাবাকে জানায়। পরে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বন্যার নিথর দেহ মাটিতে পড়ে আছে। তার ঘাড়ে ও পায়ের ওপরে জখমের দাগ দেখে মেয়েকে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত হন বাবা।
এ ঘটনায় বন্যার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার দুপুরে সিংগাইর থানার পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক অমিত কুমার দে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহত নববধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া হত্যা না আত্মহত্যা কিছুই বলা যাচ্ছে না।