
সিলেট নগরীতে অবৈধভাবে বসানো একটি পশুর হাট তুলে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় নগরীর চালিবন্দর এলাকায় বসানো ওই পশুর হাট অভিযান চালিয়ে ভেঙে দেয় কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
অভিযানকালে অবৈধ হাটে আসা শত শত কোরবানির পশু পুলিশের চাপে সরিয়ে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। আবার যেন কেউ এখানে অবৈধ হাট না বসান সে ব্যাপারে মাইকিং করে কড়া নির্দেশ দেন কোতোয়ালি থানার ওসি সেলিম মিঞা।
এ ব্যাপারে সেলিম মিঞা বলেন, দুপুরে এসে চালিবন্দরের অবৈধ হাটে আসা ব্যবসায়ীদের চলে যেতে অনুরোধ করি। তারপর সন্ধ্যায় থানার একাধিক দল পাঠানো হয় তাদের তুলে দিতে। রাতে এসেও তাদের এ হাটে না বসার অনুরোধ করা হয়। রাতের মধ্যে তাদের কোরবানির পশু নিয়ে বৈধ হাটে চলে যেতে বলা হয়। এ ছাড়া কোথাও অবৈধ পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
এ দিকে সিলেটের লাক্কাতুরা এলাকার সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসানো অস্থায়ী পশুর হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বুধবার ভার্চুয়াল আদালতে জনস্বার্থে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারক তারিকুল হাকিমের পশুর হাট না বসানোর আদেশ দেন। স্কুল মাঠে হাটের জন্য বসানো সব স্থাপনা সরিয়ে নেয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।
লাক্কাতুরার স্কুল মাঠে ঈদ উপলক্ষে পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা প্রদান করে সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন। গত শুক্রবার থেকে এই মাঠে হাট বসানোর কাজ শুরু হয়। স্কুল মাঠসহ আশপাশের স্থাপনা ও মাঠে রোপণ করা গাছের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে এই মাঠে হাট বসানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু সেই আপত্তি আমলে না নিয়েই চলছিল হাটের কার্যক্রম।
এরপর হাইকোর্টের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী জনস্বার্থে হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি এই হাট বন্ধে রিট আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত হাট বন্ধের আদেশ দেন।
মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বলেন, মহামারীর এই পরিস্থিতিতে হটস্পট তৈরি হয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় এই রিট করেছি। এ ছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বাণিজ্যিক কোনো কাজে ব্যবহার না করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও নির্দেশনা রয়েছে।
তিনি বলেন, আবেদন আমলে নিয়ে আদালত হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত হাটের ইজারা প্রদানের নোটিশ স্থগিত করেছেন। আদালতের এই আদেশ বুধবার থেকেই কার্যকর বলে জানান তিনি।
তবে আদালতের নির্দেশনা এখনও পাননি বলে জানিয়েছেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিরাজুম মুনিরা।
উল্লেখ্য, এই মাঠের পাশেই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও লাক্কাতুরা চা-বাগান। কোরবানি পশুর হাট বসলে এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা ছিল। তবুও এই মাঠটিতে পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে সদর উপজেলা প্রশাসন।
সিলেট নগরীর এমসি কলেজ মাঠ ও আলিয়া মাদ্রাসা মাঠেও কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিল সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের আপত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সিসিক। কিন্তু আপত্তি সত্ত্বেও লাক্কাতুরার স্কুল মাঠে চলছিল হাট বসানোর প্রস্তুতি। বুধবার আদালতের স্থগিতাদেশে সেখানে আর কোনো পশুর হাট বসছে না।