বগুড়ার শিবগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭১০ কেজি চাল আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় ময়দানহাটা ইউনিয়নের বাতিল হওয়া ডিলার মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তাকে শহরের স্টেশন রোডের সেউজগাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন।

এজাহার সূত্র জানায়, মশিউর রহমান বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার ছিলেন। তিনি হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য এপ্রিলের বরাদ্দ উত্তোলন করেন। ৩ এপ্রিল দাড়িদহ বাজারে বিতরণ করছিলেন। এ সময় ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে ১৫ বস্তা চাল কালোবাজারির উদ্দেশে পাচারের চেষ্টা করেন।

এ সময় ময়দানহাটা ইউনিয়নের নারী সদস্য শাহনাজ বেগম উপজেলা প্রশাসনে খবর দেন। টের পেয়ে ডিলার মশিউর রহমান ওই নারী ইউপি সদস্যকে হেনস্থা করেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল উদ্দিন চালগুলো জব্দ করলেও মশিউর রহমানের লোকজন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খাদ্য কর্মকর্তা ১১ এপ্রিল শিবগঞ্জ থানায় জিডি করেন। পুলিশ বিষয়টি দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।

এ দিকে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা কমিটির সভাপতি আলমগীর কবির উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোজাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্তে ডিলার মশিউর রহমানের নামে বরাদ্দ দেয়া চালের মধ্যে ৭১০ কেজি বিতরণের দুর্নীতি ও আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। পরে তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।

গত ১৩ এপ্রিল দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের ঘটনায় এটি বগুড়ায় দুদকের প্রথম মামলা।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মাস্টাররোলে মোট ৫৩৮ জন ভোক্তার মধ্যে ১৭ জনের নাম ২-৩ বার উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ১৪০ কেজি চাল হিসাবভুক্ত না করেই ৭১০ কেজি চাল তিনি আত্মসাৎ করেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের স্টেশন রোডে সেউজগাড়ী এলাকা থেকে মশিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মশিউর রহমান ময়দানহাটা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান এসএম রূপমের ভাই। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে (রূপম) গত ৭ জুলাই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।