কুয়াকাটা সৈকতের বালুচরে আটকে পড়ে বিশাল আকৃতির বিরল প্রজাতির কচ্ছপ। আহত কচ্ছপটিকে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে সৈকতের জিরো পয়েন্টের বালুচরে হেঁটে উঠে আহত কচ্ছপটি বালুচরে আটকে যায়।

আটকে যাওয়া আহত কচ্ছপটিকে দেখতে পর্যটকসহ স্থানীয় শতাধিক মানুষ ভিড় করেন। কচ্ছপটিকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় ফটো সেশন ও সেলফি। বিশাল আকৃতির এই কচ্ছপটির সঙ্গে ছবি তুলে স্মৃতিময় করে রাখার চেষ্টায় অনেককেই দেখা গেছে।

কচ্ছপটির ওজন প্রায় ২৫ কেজি। কচ্ছপটির ডান পাশের একটি পা (হাতা) নেই। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে পেঁচিয়ে ডান পাশের সামনের পা কেটে গেছে অনেকদিন আগে। এখনও সেখানে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।

বালুচরের জিও টিউবের সঙ্গে আটকে যাওয়া আহত  কচ্ছপটিকে উদ্ধার করেন কুয়াকাটা সৈকতের ট্যুরিজম ব্যবসায়ী কেএম বাচ্চু। তাকে এতে সহযোগিতা করেন সাংবাদিক আবুল হোসেন রাজু ও ট্যুর অপারেটর কেএম জহির। তাৎক্ষণিক তারা টুরিস্ট পুলিশকে জানান। টুরিস্ট পুলিশ বনবিভাগ ও নৌপুলিশকে খবর দেয়।

পরে মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাইন্টিফিক প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আমিরুল ইসলাম ও টুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. বদরুল কবির এবং নৌপুলিশের ইনচার্জ মো. মাহমুদ আলীসহ অন্যদের উপস্থিতিতে আটকেপড়া আহত কচ্ছপটিকে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে।

কেএম বাচ্চু বলেন, সকালে পর্যটকশূন্য সৈকতে তিনি ঘোরাঘুরি করছিল। এমন সময় দেখতে পান একটি বিশাল আকৃতির কচ্ছপ সৈকতের জিও টিউবের কোলঘেঁষে বালুচরে আটকে আছে। প্রথমে তিনি আহত কচ্ছপটিকে পানি দিয়ে সুস্থ রাখার চেষ্টা করেন। কচ্ছপটির সামনের দিকের ডান পাশের একটি হাতা নেই। সেখানে এখনও ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। যার ফলে আহত কচ্ছপটি বালুতে আটকে যায়। 

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটা উপকূলের সৈকতে এক সময় অসংখ্য বিশাল আকৃতির কচ্ছপ ডিম পারতে বালুচরে উঠত। তখন সৈকতের পাশে বনবিভাগের সংরক্ষিত বনের পাশে এসে নিরাপদে ডিম পেরে মাটি দিয়ে ঢেকে আবার সমুদ্রে চলে যেত। বন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সৈকতে জনসমাগম বেড়ে যাওয়ার পর এ সব বড় আকারের কচ্ছপ এখন দেখা যায় না। তার মতে এটি আহত হয়ে ঢেউয়ের ঝাপটায় সৈকতে আশ্রয় নিতে উঠতে পারে।

কুয়াকাটা নৌপুলিশ ফাঁড়ির এসআই  মাহামুদ আলী জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে দ্রুত তিনি সৈকতে যান। কচ্ছপটির ডান পায়ে ক্ষত রয়েছে এবং অসুস্থ কচ্ছপটি স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে কচ্ছপটিকে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে।