হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একদিনে ৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা কামাল মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়াও এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশীরা। আর আরেকজন খুন হয়েছে ভাইয়ের হাতে। একদিনে ৩টি খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে সচেতনমহল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নবীগঞ্জের শিবগঞ্জ বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা কামাল মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান।
এর আগে সন্ধ্যায় তাকে কুপিয়ে জখম করে একদল দুর্বৃত্ত। নিহত কামাল মিয়া বানিয়াচং উপজেলার বড়ইউরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও হলদারপুর গ্রামের বাসিন্দা।
নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, বুধবার সন্ধ্যায় কামাল মিয়া প্রয়োজনীয় কাজে নবীগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ বাজারে আসেন। সেখান থেকে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত কামাল মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান।
এ দিকে বানিয়াচং উপজেলার চতুরঙ্গরায়েরপাড়ায় ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন হয়েছেন। বুধবার রাত ১১টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে আবু বক্করকে (৩৮) হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বড় ভাই আলী আমজাদ জানান, তারা চার ভাই। এর মধ্যে আলী নেওয়াজ (৩০) সবার ছোট। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন সে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় নিহত আবু বক্কর ও তার ছোট ভাই আলী নেওয়াজ প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে পানি আনতে যান।
পানি এনে রাত ১০টার দিকে ছোট ভাই আলী নেওয়াজ ছুরি নিয়ে বড়বাজার শহীদ মিনারের কাছে যায়। রাতে তার বড় ভাই আবু বক্কর তাকে আনতে যান। এ সময় আলী নেওয়াজ ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা ছুড়ি দিয়ে আবু বক্করকে আঘাত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা. অপুর্ব দাস তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে বানিয়াচংয়ের দেশমুখ্যপাড়ায় প্রতিবেশীদের হামলায় কমলা বিবি (৫৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী। বুধবার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সকালে নিহত বৃদ্ধার বাড়ির নৌকা ঘাটে নৌকা রাখাকে কেন্র্্ করে প্রতিবেশী মো. লুকু গংয়ের সঙ্গে তার পুত্রবধূ জমিলা খাতুনের (৩৫) বাকবিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে লুকু মিয়াসহ তার কয়েকজন জমিলা খাতুনকে মারপিট করে আহত করে। এ সময় কমলা বিবি পুত্রবধূকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মারপিট করে। এতে কমলা বিবি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। লোকজন তাকে উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) মোহাম্মদ শেখ সেলিম জানান, সবগুলো বিষয়ই তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।