Logo
Logo
×

সারাদেশ

পদ্মার ভাঙনে বাঘার শতাধিক পরিবার গৃহহারা

Icon

আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২০, ১০:০১ এএম

পদ্মার ভাঙনে বাঘার শতাধিক পরিবার গৃহহারা

ছবি: যুগান্তর

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫ চরের মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে। নিরুপায় হয়ে তারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, দিয়াড়কাদিরপুর একটি চর। এই চরে ২৩ পরিবার বসবাস করে। তারা পানিবন্দি হয়ে আছে। তাদের মতো আরও ১৪ চরের একই অবস্থা। তাদের বের হওয়ার কোনো পথ নেই।

এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে টিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ডিঙি নৌকা। এভাবে তাদের চলছে জীবন। আশপাশে বাজারও নেই। বাজার অনেক দূরে, যেতে হলেও ডিঙি নৌকায় যেতে হয়।

তাদের আয়ের উৎস কৃষিকাজ। বর্তমানে চারদিকে পানি। জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। তবে এর মধ্যে কেউ কেউ মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। পদ্মার ১৫ চরে সাড়ে ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। পরিবার রয়েছে প্রায় তিন হাজার ৬০০। দিয়াড়কাদিপুর চরের প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করে। ২০ কাঠা জমি এক বছরের জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা।

এই চরে সাবিরুল ইসলাম বলেন, আমি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে অন্যের কাছে থেকে জমি ভাড়া নিয়ে দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছি। তার পর পদ্মার পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় ছাগল ও গরু নিয়ে বিপদে আছি।

তার স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এখন কৃষিকাজ নেই। কোনো কোনো সময়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে, যে টাকা হয় এ দিয়ে কোনোরকম সংসার চলছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর জালাল উদ্দিন বলেন, আমি ২০১৬ সালে মেম্বর নির্বাচিত হয়েছি। পদ্মার চরের মধ্যে দিয়ারকাদিরপুর, টিকটিকিপাড়া চরসহ চকরাজাপুর ও কালীদাসখালীর কিছু অংশ নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এই ওয়ার্ডে পরিবার রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক। ভোটার রয়েছে এক হাজার ৩৫ জন। চরের মধ্যে আমার ওয়ার্ড নিচু ও অধিকাংশ ফসলি জমি।

এ ছাড়া চরকালীদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের ফলে অন্যত্র সরে নেয়া হয়েছে। লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মার ভাঙনে হুমকির মধ্যে রয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার চরে তিন হাজার ৬০০ পরিবার রয়েছে। তারা এখন পানিবন্দি রয়েছে। চরের অধিকাংশ বাড়ির পাশে পানি এসেছে। ৫০ শতাংশ জমির ফসল পানির নিচে। ভাঙনের কারণে চরের শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছে। তারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। তবে তারা গরু-ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম