অভয়নগরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানায় অভিযান, জরিমানা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২০, ০৯:৩০ পিএম

পরিবেশের ক্ষতি করে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে
যশোরের অভয়নগরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে কয়লা তৈরির চুল্লি।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া আহমেদ।
আদালত সূত্র জানায়, পরিবেশের ক্ষতি করে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ভৈরব নদ তীরবর্তী ধুলগ্রামে অভিযান চালানো হয়।
অভিযান চলাকালে পাঁচ কারখানার মালিক পালিয়ে যান। তবে আশিষ কুমার দত্ত ওরফে জয় বাবু নামে এক কয়লা তৈরি কারখানার মালিক পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। এ সময় পরিবেশ অধিদফতর তাকে লাখ টাকা জরিমানা করে। কারখানা মালিক আশিষ কুমার দত্ত জানান, তিনিসহ সিদ্দিপাশা গ্রামের কবির শেখ, ধুলগ্রামের হরমুজ আলী সরদার ও চন্দ্রগাতী গ্রামের রকছেদ আলী দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে স্থানীয় হরমুজ আলীর জমি ভাড়া নিয়ে কয়লা তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। সেখানে রয়েছে মোট ৩৭টি চুল্লি। প্রতিটি চুল্লিতে পোড়ানো হয় দুইশ' মণ কাঠ। যা পুড়ে কয়লা হতে সময় লাগে ১০ দিন। তৈরিকৃত কয়লা নদীপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত একই গ্রামের ফারুক হাওলাদারের কয়লা তৈরির কারখানায় অভিযান চালানোর আগেই মালিক ও কর্মচারীরা পালিয়ে যান।
গ্রামবাসী জানায়, কাঠ পোড়ানোর সময় কালো ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা। আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে চাই।
সিদ্দিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খানএ কামাল হাসান বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগে অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন ইতিপূর্বে দু'দফা অভিযান চালিয়ে জরিমানা করাসহ কারখানা ভেঙ্গে দিয়েছিল। এ সব কারখানার মালিকেরা ক্ষমতাধর হওয়ায় তারা বারবার এভাবে ক্ষমতার জোরে কারখানা গড়ে তোলেন।
অভিযান চলাকালে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান খানএ কামাল, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল আক্তার, আমতলা ক্যাম্পের এসআই রেজাউল ইসলাম, পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক ও এলাকাবাসী। অভিযানের ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া আহমেদ বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে গড়ে ওঠা এ সব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। মালিকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। এ ধরনের কারখানা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ।