সোনারগাঁয়ে করোনার টিকা, ২ জনকে গণধোলাই দিয়ে জুতারমালা

যুগান্তর রিপোর্ট, সোনারগাঁ
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২০, ১০:৪৮ পিএম

সোনারগাঁয়ে করোনার টিকা, ২ জনকে গণধোলাই দিয়ে জুতারমালা
করোনাভাইরাসের থাবায় থমকে গেছে গোটা পৃথিবী। আক্রান্ত হাজার হাজার রোগী যোগ হচ্ছেন লাশের মিছিলে। মহামারীর এমন দৃশ্য কোনোদিন দেখেনি বিশ্ব।
বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। আতঙ্ক, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে মানুষ। অনেকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।
আর এই করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে প্রতারণা শুরু হয়েছে। রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর কোবাগা এলাকায় নকল করোনাভাইরাসের টিকা বিক্রি শুরু করে দুই প্রতারক।
এ সময় এলাকাবাসী ওই দুই প্রতারককে টিকাদানের বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ আটকের পর গণধোলাই দেয় ও গলায় জুতারমালা পড়িয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের কোবাগা হরি মন্দিরে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে বলে এলাকায় মাইকিং করা হয়। গ্রামের সহজ-সরল লোকদের বোকা বানিয়ে আবজাল হোসেন ও বাবুল ইসলাম নামের দুই প্রতারক গতকাল রোববার সকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই এলাকায় গিয়ে করোনাভাইরাসের কথা বলে ভিটামিন ইনজেকশন দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারণার বিষয়টি এলাকাবাসী বুঝতে পেরে ওই দুই প্রতারককে টিকাদানের বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ আটক করে। পরে তাদের গণধোলাই দিয়ে জুতারমালা পড়িয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করানো হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হেপাটাইটিস-বি-এর টিকা দেয়া হবে বলে আবজাল হোসেন ও বাবুল ইসলাম নামের দুই ব্যক্তি এলাকায় লোক দিয়ে প্রথমে মাইকিং করায়। পরে ওই ব্যক্তিরা করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার কথা বলে জনপ্রতিজনের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে হাতিয়ে নেয়।
তালতলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আহসানউল্লাহ যুগান্তরকে জানান, করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার নাম করে দুই ব্যক্তি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে লোকমুখে জানতে পেরেছি। এলাকাবাসী তাদের আটকের পর গণধোলাই দেয় ও পরে তাদের ছেড়েও দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই ওই দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে থানায় এখনও পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পলাশ কুমার সাহা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনো স্বাস্থ্যকর্মী জামপুরের কোবাগা এলাকায় যায়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া মাঠে মাইকিং করে কোনো লোক টিকা দিবে এ বিষয়টি প্রতারণা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। তার মধ্যে আবার করোনাভাইরাস টিকা ও সেটা আবার টাকায় বিক্রি করে। পুরো বিষয়টি অবাক করার মতো ঘটনা। এ ব্যাপারে সবাইকে সর্তক হতে হবে।