কনের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্মাপাড়ে বরের অপেক্ষা!
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২০, ১১:১৩ এএম
পদ্মাপাড়ে বরের অপেক্ষা। ছবি: যুগান্তর
রাজশাহীর পদ্মায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ে বাড়ির নৌকাডুবির ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কনেকে ফিরে পাবার আসায় বসেছিলেন বর রুমন আলী (২৪)।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে দুটি পরিবারের ৫ জন সদস্য রয়েছেন।
মর্মান্তিক এ মৃত্যুর ঘটনায় পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। দিনভর স্বজনরা ঘটনাস্থল রাজশাহী মহানগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় নিখোঁজদের খোঁজে অপেক্ষা করেছেন।
এ সময় স্বজন হারানোর ব্যথায় সবাই হয়ে পড়েন শোকে স্তব্ধ। এ ছাড়া কনের বাড়িতে চলে শোকের মাতম। সন্ধ্যার পরে শোক আর বেদনায় নিহতদের চিরবিদায় জানান। তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
নৌকাডুবির পর ভাগ্যক্রমে বর রুমন আলী (২৪) কোনোরকমে প্রাণে বাঁচলেও নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণির (১৬) সন্ধান মেলেনি। সন্ধ্যা ৭টার পরও তাকেসহ নিখোঁজ আরও ৩ জনকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রাখেন ডুবুরি দলের সদস্যরা। তবে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
এ সময়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শনিবার বিকালে পদ্মাপাড়ে রুমন বলেন, আমি আর পূর্ণি পাশাপাশি বসেছিলাম। নৌকা ডুবে যাওয়ার পর সবাই বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পূর্ণি আমাকে আঁকড়ে ধরে। আমাদের উদ্ধারে একটি বালুবাহী ট্রলার এগিয়ে আসে।
রুমন বলেন, ট্রলারটি থেকে একটি মোটা রশি ফেলা হয়। এ সময় সবাই রশিটি ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন। আমিও রশিটি ধরার চেষ্টা করি। ধরেও ফেলি। রশি ধরা নিয়ে এ সময় সবাই হুড়োহুড়ি করার কারণে পূর্ণি আমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার আগ পর্যন্ত দু'হাত দিয়ে সে আমাকে শক্ত করে ধরেছিল। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত সে আমাকে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছিল।