ছবি: সংগৃহীত
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক, শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বরা।
তবে তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে প্রধান অতিথি করা হয়েছে এক ঝাড়ুদারকে।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অবুঝ তুমি সবুজ হও’ শিরোনামে ব্যতিক্রমী এক সেমিনারে।
পরিবেশবিষয়ক সচেতনতামূলক সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসনটি অলঙ্কৃত করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঝাড়ুদার আব্দুল লতিফ।
শুধু তাই নয়; অনুষ্ঠানে চমক নিয়ে হাজির হন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের প্রভাষক সাদিক হাছান শুভ। গলায় প্লাস্টিকের বোতল,পলিথিন ঝুলিয়ে অনুষ্ঠানে আসেন তিনি।
সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে এসব ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয় সেই ব্যতিক্রমী সেমিনার। ইন্সটিটিউট অব লার্নিং প্রমটিং ট্রলারেন্স নামে পরিবেশবাদী সংগঠন এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাষ্টিক সামগ্রী ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঝাড়ুদার আব্দুল লতিফ বলেন, ‘যে কোনো অনুষ্ঠানে অতিথির চেয়ারে বসেন, বক্তব্য দেন এমপি, মন্ত্রী আর নেতারা। সেই স্থানে নিজেকে দেখতে পেয়ে আমি গর্বিত। এটা একটা দৃষ্টান্ত হতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার একমাত্র কাজই হচ্ছে আপনাদের ফেলো ময়লা পরিস্কার করব। তবে আপনারা যদি ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন তাহলে আমার মতো পরিচ্ছন্নকর্মীদের কাজ সহজ হয়। আমি সারাদিন ঝাড়ু দিই। এরপরও অনেক স্থান পরিস্কার রাখতে পারিনা। এতে নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়। কিন্তু সবাই যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেললে এ ঘটনা ঘটে না। আপনারা একটু সচেতন হলে পরিবেশ সুন্দর থাকে আর আমারও কষ্ট কম হয়। ’
ব্যাতিক্রমী এই সেমিনারের আয়োজক সাদিক হাছান শুভ বলেন, ‘যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারের প্রতিবাদে আমরা এই সেমিনারের আয়োজন করেছি। এ নিয়ে আমরা কথা বললেই কাজ হবে না। যিনি এসব ময়লা পরিস্কার করেন তিনি সেমিনারে অনুপস্থিত থাকলে এ সেমিনারই অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। তাই অতিথি হিসেবে মাঠ পর্যায়ের কাজ করা ঝাড়ুদারকে রেখে বক্তব্য শুনেছি। এতে শিক্ষার্থীরা সচেতন হবে বলে আশা করি।’
কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ব্যতিক্রমী সেমিনার স্থানীয়ভাবে ভূয়োসী প্রশংসা পেয়েছে।