Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিশ্ব রেকর্ড গড়তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৮ ফুট দৈর্ঘ্যের কলম

Icon

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২০, ০৯:০২ পিএম

বিশ্ব রেকর্ড গড়তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৮ ফুট দৈর্ঘ্যের কলম

কলম। ছবি: যুগান্তর

বিশ্ব রেকর্ড গড়ে গিনেস বুকে বাংলাদেশ ও নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ২৮ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বলপয়েন্ট কলম তৈরি করেছেন আব্দুল্লাহ আল হায়দার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই যুবকের নির্মিত ৭৮ কেজি ওজনের এই কলমের দৈর্ঘ্য ২৭ দশমিক ৮ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ইঞ্চি। 

সেগুন গাছ দিয়ে বানানো কলমটিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলমের স্বীকৃতি দিতে ইতিমধ্যে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদনও করেছেন তিনি। স্বীকৃতি পেতে হলে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের দেয়া ৬১টি শর্ত পূরণ করতে হবে হায়দারকে। 

যদিও তার দাবি, গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সবগুলো শর্তই পূরণ করতে পেরেছেন তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের মৃত শরীফ আব্দুল্লাহ হারুনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল হায়দার তার পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। 

হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করে এখন বাড়িতেই সময় কাটছে তার। বাড়ির ছাদের ওপর কলমটি তৈরি করেছেন তিনি। কলমটিতে আরবি হরফে খোদাই করে লেখা হয়েছে আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সুরার নাম।

হায়দার নিজেই আরবি হরফে নামগুলো খোদাই করেছেন। আর কলমের নিপ তৈরিতে তাকে সহযোগিতা করেছেন মাস্টার ক্রাফটম্যানশিপের হেড ট্রেইনার জাহিদ হোসেন। 

আর আরবি হরফে লেখাগুলো যাচাইয়ে সহযোগিতা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিরামপুর উত্তরপাড়ায় অবস্থিত মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নজরুল ইসলাম বিন সাইদ এবং সদর উপজেলার নরসিংসার এলাকার জোবায়দা খাতুন মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

হায়দারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ জানুয়ারি তিনি কলমটি তৈরির কাজ শুরু করেন। এ জন্য গ্রামের পার্শ্ববর্তী লালপুর বাজার থেকে ২৮ হাজার টাকায় ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেগুন গাছ কিনেন তিনি। 

গাছটি বাড়িতে এনে ছাদের ওপর রেখে শুকিয়ে দুইভাগে কাটেন। এরপর ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ও আধা ইঞ্চি প্রস্থের স্টিলের পাইপ স্থাপন করে গাছটি আঠা দিয়ে যুক্ত করেন। কলমটির জন্য ১৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের নিপ বানাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি ওয়ার্কশপে সাতবার চেষ্টা করে অষ্টমবারের মাথায় সফল হন হায়দার। ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কলম তৈরির কাজ শেষ করেন।

হায়দার বলেন, বল পয়েন্ট কলম তৈরির জন্য ১৫ দিন আরবি হরফে লেখার চর্চা করেছেন তিনি। পরে রাতে কলমের গায়ে আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সুরার নাম এবং দুটি সুরার চারটি আয়াত আরবি হরফে লিখে খোদাই করেন। 

তিনি বলেন, এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ বল পয়েন্ট কলম হিসেবে স্বীকৃতি পেতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করেছেন তিনি। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ তার আবেদনটি গ্রহণ করে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ৬১টি শর্ত দিয়েছেন। সবগুলো শর্তই পূরণ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন হায়দার।

হায়দার আরও বলেন, গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি যে, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের হায়দরাবাদের আচার্য মুকুনুরি শ্রীনিভাসা নামে এক ব্যক্তি ৩৭ দশমিক ২৩ কেজি ওজনের সাড়ে পাঁচ মিটার (১৮ দশমিক ৫৩ ফুট) দৈর্ঘ্যর একটি বল পয়েন্ট কলম তৈরি করেছিলেন।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, কলমটিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আবেদন জানিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ই-মেইল করেন হায়দার। তার ই-মেইলের উত্তরে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার এলাকার জোবায়দা খাতুন মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, কলমে খোদাই করে আরফি হরফে লেখা আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সূরার নাম তিনি যাচাই করেছেন। সবগুলো নামই নির্ভুলভাবে লেখা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম