চট্টগ্রামে স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ উত্তোলন, তবে অস্তিত্ব নেই স্কুলের
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২০, ০৬:০২ এএম
দুর্নীতি। প্রতীকী ছবি
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৩ নাম্বার মির্জাপুর ইউনিয়নে প্রায় দুই বছর আগে অস্তিত্বহীন একটি বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল চার লাখ টাকা।
এর মধ্যে উক্ত প্যাকেজের সঙ্গে আরও নয়টি প্রকল্পের কাজের চূড়ান্ত বিল দাখিল করে ২০১৭ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে উত্তোলনও করা হয়েছে।
তবে যে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ করা হয়েছে ওই নামে কোনো বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি উপজেলা প্রশাসন।
বরং উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের এসকে এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি বিদ্যালয়ে উন্নয়ন তথা বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ না করেই অর্থ হরিলুট করেছেন। যদিও ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির মালিক এমন অভিযোগ মানতে নারাজ।
জানা গেছে, সম্প্রতি উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি তাদের সমাপ্তকৃত প্রকল্পের কাজের জামানত উত্তোলনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন দাখিল করে। ওই আবেদন পেয়ে বাউন্ডারি ওয়ালের ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করতে গিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) রুহুল আমিন উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে এই নামে (মির্জাপুর মডেল স্কুল) কোনো বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।
পরে ইউএনও রুহুল আমিন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে (এসকে এন্টারপ্রাইজ) আগামী তিনদিনের মধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে প্রকল্পের ঠিকাদার এসকে এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হারুন বলেন, মির্জাপুর মডেল স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ আমি পেয়েছিলাম বটে। তবে ওই সময়ে আমার কাজের প্রচুর চাপ থাকায় আমি ওই প্রকল্পের কাজটি স্থানীয় কয়েকজন উপ-ঠিকাদারদের হস্তান্তর করি। তারা কাজ শেষ করে টাকা উত্তোলন করেছে। এ বিষয়ে আমি আর বেশি কিছু জানি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, আমার কার্যালয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক তার জামানত উত্তোলনের জন্য দাখিল করেন। উক্ত আবেদনটি পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখি বিগত ইউএনও থাকা অবস্থায় উক্ত কাজটি হয়ে গেছে। কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শন করতে গিয়ে মির্জাপুর মডেল স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এমনকি ওই নামে মির্জাপুর এলাকায় কোনো বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া যায়নি। তাই উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিককে আগামী তিনদিনের মধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি। অন্যথায় ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।