Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভোলায় নির্বাচন অফিস সহকারীর স্ত্রীর মর্যাদা পেতে আদালতে মামলা

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট, ভোলা

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৪:১৯ পিএম

ভোলায় নির্বাচন অফিস সহকারীর স্ত্রীর মর্যাদা পেতে আদালতে মামলা

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী মনির হোসেন লোকমান ও তার স্ত্রী দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করা সালমা বেগম। ছবি: যুগান্তর

ভোলায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী মনির হোসেন লোকমানের বিরুদ্ধে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে স্ত্রীকে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠেছে। 
শনিবার দুপুরে ভোলার একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে সামলা বেগম লোকমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন। 

লোকমান গত দুই বছর ধরে সালমা বেগম নামের এক নারীকে বিয়ে করে তার সঙ্গে গত এক বছর ধরে সংসার করে এখন আর পাত্তা দিচ্ছেনা বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী।

এদিকে স্বামীর অধিকার পাওয়ার দাবিতে তিনি ভোলার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে লোকমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। মনির হোসেন ওরফে লোকমান চরফ্যাশন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের জালাল মাস্টারের ছেলে এবং ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী পদে কর্মরত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সালাম বেগম জানান, তার বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কাশেমগঞ্জ এলাকায়। তিনি ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য চরফ্যাশন নির্বাচন অফিসে যান। এসময় মনির হোসেন ওরফে লোকমান ওই অফিসের ‘অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ভোটার আইডি কার্ড দ্রুত সংশোধন করে দেবেন বলে সালমা বেগমের কাছ থেকে কাগজপত্র নেয়। এসময় লোকমান ভুক্তভোগী সালমা বেগমের কাছ থেকে মোবাইল নাম্বার রেখে দেয়। এবং তাকে বাড়ি চলে যেতে বলে। 
পর দিন লোকমান সালমা বেগমকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে লোকমান সালমা বেগমকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি না হলে লোকমান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সালমা বেগমকে প্রেমে রাজি করায়। এর কিছুদিন পর লোকমান সালমা বেগমকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। সালমা বেগম তখন রাজি হন। 

গত ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি লোকমান বিবাহের কথা বলে সালমা বেগমকে ঢাকার শ্যামলীতে তার এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে কাজী ডেকে এনে তাদের দুজনের বিয়ে পড়ান। ওই সময় সালমা বেগম কাবিননামার কথা বললে লোকমান আইডি কার্ড সংশোধন করা হলে তারপর কাবিন করবেন বলে সালমাকে জানায়।

বিবাহের পর থেকে তাদের দুজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর হিসেবে সংসার করতে থাকে। এমনকি লোকমান সালমা বেগমের বাড়ীতেও বেশ কয়কবার বেড়াতে যায়। স্ত্রী হিসেবে সালমা বেগমকে নিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতো। কিছুদিন তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিলো। এসময় লোকমান সালমা বেগমের কিছু অশ্লীল ভিডিও ও ছবি তুলে রাখে। কিছুদিন পর সালমা বেগম লোকমানের কাছে বিয়ের কাবিননামা চাইলে লোকমান ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। লোকমান উত্তেজিত হয়ে সালমা বেগমকে মারধর করে এবং তার সঙ্গে কোনও বিবাহ হয় নাই বলে জানায়। বিভিন্ন সময় সালমা বেগমের তোলা অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে বলে সালমা বেগমকে হুমকি দিতো লোকমান। 

একসময় তারা কিছু টাকা নিয়ে চলে যেতে সালমা বেগমকে প্রস্তাব দেন। সালমা বেগম তাতে রাজি না হওয়ায় আত্মীয়-স্বজন ও বিভিন্ন লোকজন দিয়েও লোকমান সালমা বেগমকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। সালমা বেগম নিরুপায় হয়ে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানায়। লোকমান গংরা প্রভাবশালী হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি বলেও জানায় সালমা।

এ অবস্থায় লোকমান চরফ্যাশন নির্বাচন অফিস থেকে বদলী হয়ে পটুয়াখালী যোগদান করেন। সর্বশেষ বর্তমানে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত আছে। স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে লোকমানের সাথে যোগাযোগ করলে সালমা বেগমকে প্রাণ নাশের হুমকি ও ইন্টারনেটে আপত্তিকর অশ্লীল ছবি ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সে সালমা বেগমকে চিনে না বলে জানিয়ে দেয়। 

পরে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী সালমা বেগম বাদী হয়ে ভোলার জজ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মনির হোসেন ওরফে লোকমান বলেন, তার সঙ্গে আমার কিছুদিন আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর বাইরে আর কিছু না। তাকে আমি বিবাহ করিনি, সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। অশ্লীল ভিডিও ও ছবির ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তাও অস্বীকার করেন লোকমান।

এব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আলাউদ্দিন আল মামুন জানান, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়াও মোবাইলে ভোলার পুলিশ সুপার আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম