কক্সবাজারে লুটের এক কোটি ইয়াবার মধ্যে উদ্ধার দুই লাখ!

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:০১ পিএম

ইয়াবা। ফাইল ছবি
কক্সবাজার শহরের মাঝিরঘাটস্থ বাঁকখালী নদী থেকে খালাসের সময় এক কোটি ইয়াবা লুটের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট তিনজনকে দুই লাখ পিস ইয়াবাসহ আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রোববার ভোর রাতে ইয়াবাসহ তাদের আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, সেখানে ইয়াবা ছিল প্রায় ১০ লাখ পিস। তবে ইয়াবার পরিমাণ যা হোক না কেন অপরাধীসহ ইয়াবা পুলিশের আওতায় না আসা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
পুলিশের অভিযানে আটককৃতরা হল সদর উপজেলার খরুশকুল ইউনিয়নের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী ডজনখানেক মামলার আসামি ফিরোজ ও তার দুই সহযোগী সহোদর মোস্তাক এবং রমজান।
৮ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা লুটের পর প্রথমে মোস্তাকের নৌকা করে ইয়াবার একটি অংশ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে লুটকৃত ইয়াবার ওই অংশটি তার ভাই রমজানের বাসায় রাখা হয়। পুলিশ ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে খরুশকুল কুলিয়াপাড়াস্থ এক খামার বাড়ি থেকে ফিরোজকে আটকের পর তার স্বীকারোক্তি মতে রমজানের বাসা থেকে ২ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।
এ দিকে ইয়াবা লুটের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে ২ লাখ ইয়াবাসহ পুলিশ আটক করলেও ইয়াবা লুটে নেতৃত্ব দেয়া জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী মিজান গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে বিমানযোগে দেশ ত্যাগ করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে ইয়াবা লুটের প্রধান হোতা মিজান ভারতে অবস্থান করছেন। বিষয়টিও ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
রোববার ইয়াবা উদ্ধারের অভিযানের নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসাইন ও ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর মানস বড়ুয়া।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, ইয়াবা লুটকারীদের ধরতে পুলিশ ইতিপূর্বে ঘটনাস্থলসহ সম্ভাব্য স্থানে কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে। এই ইয়াবার চালানের সঙ্গে জড়িত এবং লুটকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি সফল অভিযানও হয়েছে। অভিযান শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, ইয়াবা লুটের ঘটনার পর থেকে পুলিশ এই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। যে কারণে ইতিপূর্বে ইয়াবার বিশাল একটি অংশ উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ইয়াবার চালানের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মাঝিরঘাটস্থ আবু ছৈয়দ কোম্পানির জেটিতে মাছ ধরা ট্রলারে করে ইয়াবার একটি বিশাল চালান খালাস হয়। জেটি দিয়ে কূলে তোলার সময় স্থানীয় টেকপাড়া এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তার বাহিনী ইয়াবার চালানটি লুট করে।
মিজানের নেতৃত্বে তার বাহিনীতে ওই সময় ছিল তার ছোট ভাই কায়সার, যে জেটি দিয়ে ইয়াবা খালাস হয় ওই জেটির মালিকের ছেলে মুজিব, ইফতেখার খান বাবু, সাইফুল, জুনায়েত, নাছির মিয়া, ভুলু মিস্ত্রি, বাদশা, তানভিরসহ আরও কয়েকজন। লুটের সময় জেটিঘাটে ইয়াবার মালিক বোরহান, তার ভাই শহীদ ও তাদের পার্টনার সাইফুল এবং আবুল কালামের সঙ্গে মিজান বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইয়াবার মালিকরা।