ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফোনে ডেকে এনে নারীকে ঝলসে দিল ১৬ মামলার আসামি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:০৬ এএম
আটক মোস্তাক আহমেদ ফয়সাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় খোশ নাহার আক্তার (৩৫) নামে এক নারীকে নির্যাতন করেছে ১৬ মামলার আসামি মোস্তাক আহমেদ ফয়সাল (৩৬) নামে এক যুবক।
শনিবার রাতে শহরের কাউতলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
খোশ নাহার আক্তার পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জে মাধবপুর উপজেলার ধর্মনগর ইউনিয়নের শিয়ালহুড়ী গ্রামের মৃত সোনাব আলীর মেয়ে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ঘণ্টাব্যাপী নির্যাতনে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লোহা গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। এমনকি তার মাথার চুলও কেটে ফেলা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার খোশ নাহার বলেন, ফয়সালের গ্রামের বাড়ি আমার বাড়ি পাশাপাশি। সেখান থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তার সব কুকর্মের কারণে তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করে দিয়েছে এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে সে তার মোবাইল থেকে ফোন করে আমাকে জানায়, তার বৌয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য সহযোগিতা চেয়ে বাসায় আসতে বলে।
তিনি বলেন, আমি বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হোটেল ওজান ভাটির সামনে অবস্থান করি। সে এসে আমাকে গাড়িতে তুলে তার কাউতলীর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। তারপর আমার হাত-পা বেঁধে দেয়। ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকাও এনে দেই। আমার কাছে থাকা নগদ চার হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন সেট নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। আরও টাকার জন্য শুরু করা হয় নির্যাতন। তার সঙ্গে কয়েকজন মিলে মারধর করতে শুরু করে। আমি চিৎকার শুরু করলেও কেউ শুনে না। পরে আমার হাত, পা ও গলায় লোহা দিয়ে গরম ছ্যাঁকা দিতে শুরু করে। কয়েকজন চেপে ধরে আমার মাথার চুলও কেটে দেয়।
খোশ নাহার বলেন, এক পর্যায়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করে শিশু অপহরণকারী আটক করা হয়েছে বলে পুলিশকে অবহিত করে। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এসআই মোতালেব হোসেন বলেন, আমরা ৯৯৯ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। অভিযুক্ত মোস্তাক আহমেদ ফয়সালকেও আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ফয়সালের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর থানায় হত্যা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্রসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।