বেতন কাটার আদেশের পর সাক্ষী এলেন আদালতে

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৪৯ পিএম

রাজশাহীর বাঘায় এসিল্যান্ড অফিসে নাশকতার মামলায় সরকারি সাক্ষীকে বারবার সমন দেয়ার পরও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। আদালতের তরফে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নোটিশ জারি করা হয়।
অবশেষে বেতন কাটার আদেশ দেয়ার পর আদালতে হাজির হন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বাদল চন্দ্র হালদার।
বৃহস্পতিবার মামলার নির্ধারিত দিনে বাদল চন্দ্র রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তালুকদারের আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন।
সরকারি এ কর্মকর্তার কারণে নাশকতার এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া গত দুই বছর ধরে আটকে ছিল।
গুরুত্বপূর্ণ এ মামলাটির সব সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ বহু আগেই শেষ হয়েছে। এখন বাদল চন্দ্র হালদারের সাক্ষ্য প্রদানের পর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হল। যে কোনো দিন মামলাটির রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আদালত সূত্র জানায়।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাঘা থানার এসিল্যান্ড অফিসে বিএনপি-জামায়াত শিবিরের আন্দোলনের সময় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ অগ্নিকাণ্ডের ফলে এসিল্যান্ড অফিসের ৭ হাজার নথি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভস্মীভূত হয় দুটি মোটরসাইকেল।
এ ছাড়া জমিজমা সংক্রান্ত বিপুল পরিমাণ জমির কাগজ, নামজারির নথি, পুরাতন রেজিস্টার, বালাম বইসহ বিভিন্ন ধরনের জমির নকশাপত্রও পুড়ে যায়। এ ঘটনায় বাঘা থানার এক এসআই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
২০১৬ সালের ১২ মার্চ পুলিশ বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ঘটনার সময় বাদল চন্দ্র হালদার বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। এসিল্যান্ড না থাকায় ইউএনও এসিল্যান্ডেরও দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনার পরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আদালত এ মামলার সাক্ষী হিসেবে তাকে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সমন দেন। কিন্তু বরাবরই আদালতে হাজির হওয়া থেকে বিরত থাকেন।
২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ও ৩ অক্টোবর আদালত মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে আবারও বাদল চন্দ্র হালদারকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। বিষয়টি হাইকোর্টের গোচরে আনা হয়। হাইকোর্ট এ সরকারি কর্মকর্তার বেতন কাটার জন্য আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তালুকদার গত ৬ জানুয়ারি দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বাদল চন্দ্র হালদারের বেতন ভাতা কাটার জন্য আদেশ দেন। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আদেশ দেন।
আদেশের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়। এরপরই টনক নড়ে বাদল চন্দ্র হালদারের। তিনি বৃহস্পতিবার মামলার নির্ধারিত দিনে আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন। ফলে আদালত তার বেতন ভাতা অবমুক্ত করারও আদেশ জারি করেন।