স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে ভোলায় ৫ মাসের ভ্রূণ হত্যা!
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর রিপোর্ট, ভোলা
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪৫ পিএম
![স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে ভোলায় ৫ মাসের ভ্রূণ হত্যা!](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2020/01/28/image-272504-1580230057.jpg)
শরীফুল ইসলাম। ফাইল ছবি
ভোলায় স্বামীর বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য এ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্ত্রী ও তার পরিবারের দাবি করেন।
ইতিপূর্বে স্ত্রী বাদী হয়ে স্বামীসহ তিনজনকে আসামি করে ভোলা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা করেছে। ভ্রূণহত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্ত্রী বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ধর্ষণ মামলার ১নং আসামি শরীফুল ইসলামকে সোমবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মামলার এজাহার (অভিযোগপত্র) সূত্রে জানা গেছে, ভোলার সদর উপজেলার পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জংশন গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ফরাজীর ছোট ছেলে মো. শরীফুল ইসলাম (১৭) একই ইউনিয়নের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু শরীফুল ইসলাম বিয়ে করতে রাজি হয় না। তাই বাধ্য হয়ে ছাত্রী ভোলা সদর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
ওই ছাত্রী ও তার স্বজনরা সোমবার রাতে জানায়, মামলার পরে দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে ছাত্রীর সঙ্গে শরীফুল ইসলামের দুই লাখ টাকা দেনমোহরে ২ জানুয়ারি বিবাহ সম্পন্ন হয়। সোমবার শরীফুল ইসলাম পিকনিকে নেয়ার নাম করে ছাত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ভোলা শহরে নিয়ে যায়।
তিনি জানান, সেখানে মেরী স্টোপস নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে তার পেটের পাঁচ মাসের বাচ্চা (অ্যাবোরশন) নষ্ট করার জন্য ইনজেকশন দেয়। এ সময় তিনি প্রতিবাদ করলেও শরীফুল তা মানেনি। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক, শরীফুলের বোন ও শরীফুল জোর করে ইনজেকশন নিতে বাধ্য করে।
ছাত্রী আরও জানায়, ইনজেকশন দেয়ার পরে সে বাড়িতে ফিরে আসলে কিছুক্ষণ পরে পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে ব্যথা তীব্র হলে ছাত্রীকে ভোলা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করে। ভর্তির পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি জীবিত বাচ্চা প্রসব হয়। কিন্তু পরক্ষণেই তার মৃত্যু হয়।
ছাত্রী জানায়, তার পেটের ৫ মাসের বাচ্চা (ভ্রূণ) হত্যা ও বিয়ে ভাঙার উদ্দেশ্যেই স্বামী শরীফুল ইসলাম তাকে জোর করে ইনজেকশন দিয়েছে।
ছাত্রীর বাবা জানান, তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ভ্রূণ হত্যার ঘটনায় আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হাসপাতালে উপস্থিত স্বামী শরীফুল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। দু'জনের সম্মতিতেই মেরী স্টোপস ক্লিনিকে গিয়ে তার স্ত্রীর পেটের বাচ্চা নষ্ট করা হয়েছে।
মেরী স্টোপস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক মাইনউদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তারা সাধারণত দেড়-দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বার ভ্রূণ নষ্ট করে থাকে। এ ভ্রূণের বয়স পাঁচ মাস হয়েছে, সে তথ্য হয়তো গোপন করা হয়েছে।
ভোলা সদর থানার আওতাধীন ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রতন কুমার শীল বলেন, পুলিশ ধর্ষণ মামলার আসামি শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। ভ্রূণহত্যার ঘটনা পূর্বের মামলার এজাহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে।