Logo
Logo
×

সারাদেশ

মুরাদনগরে ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ০৪:০৮ এএম

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ভূমিসংক্রান্ত সেবাপ্রত্যাশীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগও পাওয়া যায়।

প্রতারণা করে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোনো কাজ করে না দেয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া বাদী হয়ে ওই সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার শ্রীকাইল মৌজায় খাসজমি বরাদ্দ দেয়ার নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষগ্রহণ করেন সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম।

এ নিয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বুধবার তদন্ত কমিটি বিষয়টির ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম অফিসে বসে গত আড়াই বছর ধরে ভূমিসংক্রান্ত সেবাপ্রত্যাশীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন।

খারিজ কিংবা যেকোনো ভূমিসংক্রান্ত সেবার জন্য তার কাছে গেলেই তিনি ইচ্ছামতো হাতিয়ে নেন উৎকোচ। চাহিদামতো অর্থ না পেলে তিনি কোনো খারিজ কিংবা অন্যান্য কাগজে মোটেও স্বাক্ষর করেন না।

জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা সার্ভেয়ার আরিফের রয়েছে কর্মস্থল এলাকায় বিপুলসংখ্যক লোকজন। রয়েছে দালাল সিন্ডিকেটও। যার ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।

গত আড়াই বছরের মধ্যে মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বদলি হলেও অদৃশ্য কারণে সার্ভেয়ার আরিফ রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

নানা সমালোচনা হলেও রহস্যজনক কারণে তাকে বদলি করতে পারছে না প্রশাসন। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এদিকে দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার আরিফের বিরুদ্ধে ভূমিসংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া। তার অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে শুনানির কথা থাকলেও নানা ধরনের হুমকির কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি।

পরে ভুক্তভোগী এ নিয়ে ভূমিসংস্কার বোর্ডে অবহিত করার পর মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমশিনারের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে শুনানি করার জন্য জেলা প্রশাসক তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করেন।

অভিযোগকারী সাদেক মিয়া জানান, বছরখানেক আগে শ্রীকাইল মৌজাস্থ বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর বাড়ির দক্ষিণ পাশে ৩০ শতাংশ ডোবা লিজ নিয়ে দেয়ার জন্য সার্ভেয়ার আরিফ তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন।

পরে দীর্ঘদিন ঘোরাঘুরি করার পর ওই খাসভূমি সাদেক মিয়াকে লিজ এনে না দেয়ায় তিনি তার দেয়া দুই লাখ টাকা ফেরত চান। কিন্তু ওই টাকা কর্মকর্তাদের দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান সার্ভেয়ার আরিফ। এতে ভুক্তভোগী তার টাকা ফেরত চাইলে তাকে উল্টো হুমকি-ধমকি প্রদান করেন।

বিষয়টি তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাংবাদিকদেরও অবহিত করে রাখেন। যদিও ভূমিসংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগে সাদেক মিয়া সার্ভেয়ারকে দুই লাখ টাকা ঘুষ প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

পরে সাংবাদিকদের কাছে ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়সহ সার্বিক বিষয়ে অবহিত করে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি সাদেক মিয়ার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করিনি। এটি একবারেই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ।

কোনো সেবাপ্রত্যাশীকেও উৎকোচের জন্য হয়রানি করিনি, আমার কোনো দালাল সিন্ডিকেটও নেই। এসবই আমার বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত।

তিনি বলেন, আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে গঠিত তদন্ত কমিটিই আমার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম