বগুড়ায় দাদন ব্যবসায়ীদের হামলায় স্কুলশিক্ষক নিহত!
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪০ এএম
বগুড়ার শেরপুরে দাদন ব্যবসায়ীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম (৫০) নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান।
শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, বিশালপুর ইউনিয়নের দোয়ালছাড়া এলাকায় একটি মাদ্রাসার বারান্দায় তিনি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। কারা তাকে বিষ খাইয়েছে সে ব্যাপারে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।
শেরপুর থানার ওসি এবং অন্যারা জানান, সাইফুল ইসলাম বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার পেং হাজারকি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের দোয়ালছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
গত সোমবার তিনি শেরপুরে তার মেয়ের বাড়িতে আসেন। ওই রাতে দোয়ালছাড়া গ্রামের একটি এবতেদায়ি মাদ্রাসার বারান্দায় তিনি বিষক্রিয়ায় ছটফট করছিলেন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে তিনি সেখানে মারা যান।
সাইফুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা জানান, তার ছেলে শুভ আইপিএল জুয়ায় আসক্ত। তিনি গ্রামের কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ীর কাছে চড়া সুদে ১৫-১৬ লাখ ঋণ নেন। এ টাকা পরিশোধ না করলে দাদন ব্যবসায়ীরা চাপ দেন। তখন সাইফুল ইসলাম তার স্কুলের বেতনের চেকবই দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জমা রাখেন।
তাদের ধারণা, দাদন ব্যবসায়ীরাই শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে মারপিট করে মুখে বিষ ঢেলে ফেলে গেছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সাইফুল ইসলামের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া রহস্যজনক। তার ধারণা, দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাঁচতে তার আইপিএল জুয়াড়ি ছেলে শুভ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তদন্ত হলে এর সত্যতা মিলতে পারে।
নন্দীগ্রামের বুড়ইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ বলেন, সাইফুল ইসলামের ছেলে শুভর কাছে অনেকে টাকা পান। কে বা কারা শিক্ষক সাইফুলকে মারপিট করে হাত-পা বেঁধে শেরপুরের দোয়ালছাড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় ফেলে যান। হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি মারা গেছেন।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি শওকত কবির জানান, মৌখিকভাবে এমন ঘটনা শুনলেও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি।