বাঘায় মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি যুবলীগ নেতার
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩২ এএম
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে এক মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন আড়ানী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম হাইড্রোজ।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে মঙ্গলবার ওই নেতার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করেন।
জানা যায়, উপজেলার হরিপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শুকচাঁন আলী জন্মসূত্রে এক বিঘা ৫ কাঠা জমির ওপর ছাপরা ঘর নির্মাণ করে স্বামী-স্ত্রী বসবাস করছেন। একই গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে আতাহার আলীসহ তার লোকজন ওই মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে।
ফলে মুক্তিযোদ্ধা নিরুপায় হয়ে বাঘা থানায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের পর রোববার বাঘা থানার পুলিশ তদন্ত করে। পুলিশ উভয়কে থানায় আসার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু তারা থানায় হাজির না হয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতাকে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে আতাহার আলী, আশরাফুল ইসলাম হাইড্রোজ, আশরাফুল ইসলাম ও আকতার আলীর নামে অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা শুকচাঁন আলী অভিযোগ করেন বলেন, আমি রোববার রাত সাড়ে ৭টার দিকে হরিপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় আড়ানী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম হাইড্রোজ ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম ফাঁকা জায়গায় হরিপুরের ডিপটিউবওয়েলের সামনে আমার পথরোধ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পাই।
তিনি বলেন, আমার ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। তারা বিয়ে করে কেউ শ্বশুরবাড়ি আবার কেউ ঢাকায় রয়েছে। ফলে আমার ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। আমি মুক্তিযোদ্ধার যে সম্মানী পাই তা দিয়ে দুইজনের ভালোভাবে সংসার চলে যায়। এ ছাড়া এ টাকা থেকে কিছু বাঁচিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসায় সহযোগিতা করি। বর্তমানে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।
এ বিষয়ে আতাহার আলী বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ আছে। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। তবে তাকে বাড়ি ছাড়ার মতো কোনো হুমকি দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আড়ানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার জমি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে স্থানীয় কিছু মানুষের দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে একবার ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধান করে দেয়া হয়েছিল। আবার তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। তবে হুমকির বিষয়ে আমাকে মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছে।
বাঘা থানার এসআই আমানুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ওসি স্যারের নির্দেশে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।