তাজরিন ফ্যাশনের নিহত ব্যক্তিকে ১০ বছর পর জীবিত উদ্ধার

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৫৬ পিএম

নিখোঁজ কাইয়ুম। ছবি: যুগান্তর
ঢাকার আশুলিয়ায় তাজরিন ফ্যাশনে নিহত হওয়ার ১০ বছর পর কাইয়ুম নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার ইদ্রিস আলীর ভাড়াকৃত একটি কক্ষ হতে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত কাইয়ুম ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানাধীন বারঘরিয়া এলাকার মো. সামছুদ্দিনের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার দেওয়ানপাম্প গলির ঘোষবাগ ইদ্রিস আলীর বাড়িতে ভাড়া থেকে জামগড়া এলাকার মদিনাপেল ফ্যাশন ক্রাফট লি. হতে আয়রনম্যান (বরখাস্ত) পদে চাকরি করতেন।
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১ এর ইন্টেলিজেন্স উইং শাখার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান বলেন, ৬ নভেম্বর ২০১৯ আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া মদিনাপেল ফ্যাশন ক্রাফট লি. হতে শ্রমিক বরখাস্ত হন। বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের মধ্যে আয়রন পদের কাইয়ুমও ছিলের।
বরখাস্তকৃত শ্রমিকের স্বভাব, চরিত্র/ নাম ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১, ঢাকা হতে দুশ্চরিত্র তালিকা নং ১৪৯/১৯, ৩০ নভেম্বর’১৯ তারিখ অফিসার ইনচার্জ নান্দাইল, ময়মনসিংহ বরাবরে প্রেরণ করা হয়।
প্রেরণকৃত দুশ্চরিত্র তালিকাটি নান্দাইল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার তদন্তকালে মোবাইলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর এসআই সুজন মিয়া কে জানান যে, উল্লিখিত ঠিকানার ব্যক্তি ১০ বছর আগেই আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনের আগুনে অথবা রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে মর্মে ওই এলাকার লোকজন এবং তার ভাই হুমায়ুনসহ স্বজনরা তাকে জানিয়েছেন।
উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সানা শামীনুর রহমানের নির্দেশনায় ইন্টেলিজেন্স উইং শাখার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসআই সুজন মিয়া শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার দেওয়ান পাম্প গলির ইদ্রিস আলীর ভাড়া বাসার একটি কক্ষে সাক্ষাত করে তার পরিচয় নিশ্চিত হন।
পরে তাকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কাউয়ুমের ভাই হুমায়ুনের সঙ্গে তার মোবাইলে কথা বলার সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
তবে তারা প্রথমে জানিয়েছেন যে, তার ভাই কাইয়ুম রানা প্লাজা বা তাজরীন ফ্যাশনের দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। তার জীবিত থাকার বিষয়টিকে প্রথমে তার বিশ্বাসই করতে চায়নি।
তিনি আরও বলেন, আর্থিক অভাব অনটনের কারণেই হয়তোবা কাইয়ুম আত্মগোপনে ছিল। এদিকে কাইয়ুমের স্ত্রী ও তার দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তারা জানান, তারা বরিশালের বেলতলা এলাকায় বসবাস করেন। ৫-৬ বছর আগে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় থাকতেন। পরে সেখান থেকে তারা বরিশালে থেকে লেখাপড়া করছে।
এলাকাবাসীর ধারণা কাইয়ুম হয়তোবা নিখোঁজের মাধ্যমে বা মৃত সাজিয়ে তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনার সুবিধা গ্রহণ করে আত্মগোপনে থাকতেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা খতিয়ে দেখলে তার আত্মগোপনের রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও ধারণা করা হয়।