স্ত্রী সন্তান পুত্রবধূ ও নাতিকে হারিয়ে নির্বাক স্কুল শিক্ষক

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৪৮ পিএম

আবদুস সালাম। ছবি: যুগান্তর
রাজশাহীর বাঘায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিজ স্ত্রী সন্তান পুত্রবধূ ও নাতিকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন স্কুল শিক্ষক আবদুস সালাম।
কান্নাজাড়িত কণ্ঠে আবদুস সালাম বলেন, আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে জান্নাতুল আক্তারের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে মাহবুবা আক্তার রেশমীর আগামী শুক্রবার বিয়ে।
বিয়ের দাওয়াত দিয়ে ফেরার পথে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন এক দুর্ঘটনায় প্রিয় মানুষের লাশ যখন রাত ২টার দিকে বাড়িতে আনা হয়, তখন আর নিজেকে স্থির করতে পারিনি।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের ভেড়ামারা পাওয়ার হাউজের যাত্রী ছাউনির সামনে মঙ্গলবার বিকালে সাড়ে ৩টায় দিকে ট্রাক-সিএনজির সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন সিএনজিচালক বাঘা উপজেলার সরেরঘাট গ্রামের ছবির মোল্লার ছেলে জালাল উদ্দিন (৪০), একই গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবদুস সালামের ছেলে মেজবাউল আলম মাসুম (৩৫), তার স্ত্রী রুনা খাতুন (২৬), ছেলে ঈব্রাহীম হোসেন রুজদী (৭ মাস) ও মেজবাউল আলম মাসুমের মা মাহমুদা বেগম (৫৪)।
বুধবার বেলা ১১টায় বাঘা উপজেলার গড়গড়ি-দাদপুর (সরেরহাট) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা সম্পন্ন করা হয়েছে। পরে দাদপুর সরেরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাজশাহী-৬ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
জানাজা পড়ান মরহুম মেজবাউল আলম মাসুমের বাবা স্থানীয় সরেরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের মাওলানা শিক্ষক আবদুস সালাম।
এ বিষয়ে স্থানীয় রবিউল ইসলাম রবি জানান, মরহুম মেজবাউল আলম মাসুমের পরিবারে একমাত্র বাবা ছাড়া কেউ রইল না। ফলে পরিবারটি নিস্ব হয়ে গেল। তার বড় বোন জান্নাতুল আক্তারের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোনের শুক্রবার বিয়ে রাজশাহীর বানেশ্বরে। এখন বিয়ের আনন্দের পরিবর্তে চলছে শোকের মাতম।
এদিকে সিএনজি চালক জালাল উদ্দীনের স্ত্রী রুনা লায়লা রানু ও ৫ম শ্রেণির ছাত্র রান্টু ও বৃদ্ধ মা সানোয়ারা বেগম রয়েছে। এ পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন একমাত্র জালাল উদ্দীন। তবে উভয় পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে চলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা।