পেনড্রাইভে করে ভারতে তথ্য পাচার করতেন পুলিশ সদস্য!

যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম

দেবপ্রসাদ সাহা। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল দেবপ্রসাদ সাহা। তাকে দুই দফায় ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পুলিশ কনস্টেবল দেবপ্রসাদ সাহা বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত অবস্থায় মাঝে মধ্যেই নোম্যানসল্যান্ড অতিক্রম করে ভারতে যাওয়া-আসা করতেন। সেই সঙ্গে ভারতের অনেকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই পুলিশ সদস্য। তিনি পেনড্রাইভে করে তথ্য পাচার করতেন।
জানা গেছে, আসামি দেবপ্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন।
ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারী আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দু'জন বেনাপোলে মাঝে মধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুইজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের শেষের দিকে দেবপ্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত একটি পেনড্রাইভ নোম্যানসল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করেন। ১৫ দিন পর আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করেন দেবপ্রসাদ সাহা।
সূত্র আরও জানায়, গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র্যাবের হাতে সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিন আটক হন। এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয় এবং ভারতের কাছে তথ্য পাচারের বেশকিছু তথ্য দেন।
পরে বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আরেফের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।
সেনা সদস্য শাহনেওয়াজ ও অফিস সহকারী আবু হানজালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের বিষয়টিও দেবপ্রসাদ স্বীকার করেছেন। ফলে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাবায় ১৬ ডিসেম্বর বেনাপোল পোর্ট থানায় কনস্টেবল দেবপ্রসাদ সাহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ওসি মামুন খান। পরে ১৭ ডিসেম্বর সকালে বেনাপোল বন্দর থানার পুলিশ দেবপ্রসাদ সাহাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
পরে দেবপ্রসাদ সাহাকে আটকের পর মামলা দিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আরও সাতদিন রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।