সংঘর্ষ। ছবি: যুগান্তর
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন চলাকালে বিএনপির অপর গ্রুপের হামলায় নয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের রোকেয়া কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলনের সময় হামলার এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ তার সমর্থক শহিদুল ইসলাম দুলাল, শামছুর রহমান শামিম, সাজেদুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও বিএনপি নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকার রোকেয়া কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন দ্বি-বার্ষিক শুরু হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী সোহেল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাস্টার হাফিজুর রহমান ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
সকাল থেকেই পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকরা সম্মেলনে যেতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দিতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে সম্মেলনস্থলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার নান্নুর নেতৃত্বে তাদের কর্মী-সমর্থকেরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
হামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রবিউল ইসলামের পক্ষের নয় নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। দু'জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে রিয়াছত হায়দার টগরকে আহ্বায়ক করে উপজেলা বিএনপির ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকরা আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। উপজেলা বিএনপির একটি পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন রবিউল আলম বুলেট।
রবিউল আলম বুলেট অভিযোগ করে বলেন, পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী সম্মেলনকে বানচাল করার উদ্দেশে সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার নয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, রবিউল জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় কিছু নেতাকে ভুল বুঝিয়ে প্রকৃত বিএনপির নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এখন তার লোকজন নিয়ে কমিটি ঘোষণার চেষ্টা করছেন। সম্মেলন চলাকালে প্রকৃত বিএনপির নেতাকর্মীদের কমিটিতে পদ দেয়ার দাবি জানালে রবিউলের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়।
অপরদিকে সম্মেলন শেষে রবিউল আলম বুলেটকে সভাপতি, আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক এবং সাজ্জাদ হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মহাদেবপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন চলাকালে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।