Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভিক্ষুক-রিকশাচালকদের নিয়ে চাইনিজ খেলেন ফরিদপুরের নূরুল ইসলাম

Icon

ফরিদপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৫২ পিএম

ভিক্ষুক-রিকশাচালকদের নিয়ে চাইনিজ খেলেন ফরিদপুরের নূরুল ইসলাম

ভিক্ষুক-রিকশাচালকদের নিয়ে চাইনিজ খেলেন ফরিদপুরের শিক্ষক নূরুল ইসলাম

প্রতিমাসে সমাজ সেবামূলক একটি ভালো কাজ করবেন। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ফরিদপুরে অর্ধশত রিকশাচালক ও ভিক্ষুকদের সঙ্গে নিয়ে চাইনিজ খেয়েছেন ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী শিক্ষক নূরুল ইসলাম (৪৩)।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের ওটু চাইনিজ রেস্তোরায় ওই ব্যক্তিদের নিয়ে একত্রে দুপুরের খাবার খান ওই শিক্ষক।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পাঁচ শিক্ষার্থী অরিন্দম ঘোষ, হাসিবুর রহমান, লাহিন মুনকার, ফারহাতুল ইসলাম, সঞ্জয় মুখার্জি।

খাবারের আইটেম ছিল চিকেন ফ্রাই, ফ্রাই্ড রাইচ, ভেজিটেবল ও কোমল পানীয়।

শিক্ষক নূরুল ইসলাম ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ফকির আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।

নূরুল ইসলাম জানান, অনেক দিনের স্বপ্ন সমাজের জন্য কিছু করা। প্রতিমাসে অন্তত একটি ভালো কাজ নিজের অর্থায়নে আমি করতে চাই। এ লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নিয়েছি।

এর আগে তিনি রিকশাচালকদের মধ্যে সকালের নাস্তা বিতরণ করেছেন, দুঃস্থদের মাঝে সেমাই, চিনি ও গুড়া দুধ বিতরণ করেছেন, এক বৃদ্ধার ঈদের যাবতীয় খরচ বহন করেছেন, শহরে রোপণ করেছেন ২০টি কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়ার চারা। এছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় রোপণ করেছেন ১ হাজার ১০০টি তালের বীজ।

নূরুল ইসলাম বলেন, প্রতিমাসে একটি করে ভালো কাজ করবেন। তা হতে পারে গাছ রোপণ, দরিদ্র কোনো শিক্ষার্থীর ভর্তির ব্যবস্থা করা, অসহায় দুঃস্থ নারীর পাশে দাঁড়ানো।

অভিজাত রেস্তোরায় বসে চাইনিজ খেতে পেরে বেজায় খুশী ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের সাদীপুর এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক মো. জয়নুদ্দীন  (৫৫)।

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, গত ৪০ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। চাইনিজ রেস্তরায় যাত্রী নিয়ে আসি, পাশ দিয়ে যাই কিন্তু কোনোদিন চাইনিজ খাইনি বা চাইনিজ হোটেলে ঢোকার সাহস পাইনি। আজ চাইনিজ খেয়ে খুব ভালো লাগছে।

ভিক্ষাবৃত্তি করা শহরের গুহল্লীর মহল্লার বাসিন্দা হাজেরা বিবি (৫২) বলেন, চাইনিজের কথা মানুষের মুখেই এতদিন শুনেছি। কখনো খাওয়া হয়নি। আজ খেলাম। বুঝলাম চাইনিজ কারে কয়। যে আমাগো চাইনিজ খাবার খাওয়ালো তার জন্য অফুরন্ত দোয়া রইলো।

অন্ধ আবদুর রাজ্জাক (৫০) ফরিদপুর শহরে দীর্ঘদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে চলেন, তাকে চেনেন না এমন লোক শহরে কমই আছে। তিনি চাইনিজ খাবার শেষে সবাইকে নিয়ে লম্বা মোনাজাত করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম