দিরাইয়ে ঝোপে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতককে নিয়ে রহস্য!
দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৫৭ পিএম
দিরাইয়ের সেই নবজাতককে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাস্তার পাশে বনের ঝোপে ফেলে যাওয়া নবজাতক কন্যা সন্তানটিতে ঘিরে সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রশ্নের।
জানা গেছে, নবজাতকের কথিত মা কলি উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের তত্ত্বাবধানেই প্রসব করেন। এর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে না জানিয়ে ওই কন্যা সন্তানটিকে নিয়ে চলে যান। রাস্তার পাশে বনের ঝোপে ফেলে যান গর্ভধারিণী ওই মা।
রোববার ৩টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদফতর ও পুলিশের মাধ্যমে নবজাতককে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মজলিশপুরের নিতাই দাসের বাড়ির পেছনে বনের ঝোপ থেকে নবজাতক কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায় পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে কলি বেগম (৩০), স্বামী তারিক মিয়া, গ্রাম জগদল উল্লেখ করে একজন মহিলা ডেলিভারি কেস নিয়ে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের সেবিকা শামীমা আক্তারের মাধ্যমে ওই নবজাতক কন্যা সন্তানটির জন্ম হয়।
সন্তান প্রসবের পর ডাক্তার নার্স চলে যাওয়ার কিছু পরে কাউকে না জানিয়েই নবজাতক সন্তানসহ গর্ভধারিণী মা ও তার সঙ্গে থাকা লোকেরা পালিয়ে যায়। রাতেই হাসপাতাল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে মজলিশপুর থেকে এই নবজাতককে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নবজাতকের নাভিতে ক্লিপ লাগানো ছিল, তখনই ধারণা করা হচ্ছিল হাসপাতালে প্রসব করানো হয়েছে।
দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. সুমন রায় চৌধুরী জানান, সকালে নবজাতকটিকে দেখে চিনতে পারেন সেবিকা শামীমা বেগম। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাতে প্রসব হওয়া সন্তান ও তার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, সে সময়ের সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। শিশুটির গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার গলা ফুলে গেছে, যে কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে পাঠানো হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, গলায় সুতা দিয়ে পেঁচিয়ে শিশুটিকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ সময় কান্না শুরু করায় মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে ফেলে চলে যায় মা।
দিরাই থানার ওসি কেএম নজরুল জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর পঙ্কজ পুরকায়স্থ খবর দিলে আমরা সেখানে গিয়ে নবজাতক কন্যা সন্তানটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ দিকে নবজাতকের যে পরিচয় হাসপাতালে দেয়া হয়েছে এর সূত্র ধরেই কথিত মা কলি ও তারিক মিয়াকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। তবে পুলিশের ধারণা, হাসপাতালে দেয়া নাম-ঠিকানা ভুয়া।